
আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সন্ধানে ভারতের ১০ রাজ্যের ৪৮টির বেশি জায়গায় একযোগে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিভ এজেন্সি (এনএইএ)। পর্যটন ব্যবসায় আড়ালে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার থেকে ভারত এবং ভারত হয়ে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও কানাডায় মানবপাচার এবং হুন্ডি কার্যকলাপের অভিযোগে এ অভিযান শুরু হয়।
শুধুমাত্র বেঙ্গালুরুর কে আরকেপুরমে অভিযানে আটক করা হয় ৮ জন বাংলাদেশি নাগরিককে। বারাসাত থেকে আটক করা হয়েছে ২ বাংলাদেশিকে। তল্লাশি করা হয় বারাসাতে শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের অফিসে।
পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, হরিয়ানা, পুদুচেরি, রাজস্থান, জম্মু কাশ্মীরে বুধবার একযোগে শুরু হওয়া এ অভিযান চলছে। ১০ রাজ্যে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতা ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় ভারতীয় সময় রাত ২টা থেকে অভিযান শুরু হয়। পশ্চিমবঙ্গে তল্লাশি অভিযান চলে বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন বনগা, হাবড়া, বারাসাত, বিরাটি, দমদম এলাকায়। এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অভিযান শেষ হলে আটকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
সূত্র মতে, জম্মু-কাশ্মীরে মূলত রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বস্তি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযানে জম্মু-কাশ্মীর থেকে জাফর আলম নামে এক রোহিঙ্গা মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে।
এছাড়া দেশব্যাপী মানবপাচারকারী হিসেবে আটকদের মধ্যে রয়েছে একাধিক বাংলাদেশি নাগরিক। দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করছেন তারা। তল্লাশি অভিযানে তাদের বৈধ বাংলাদেশের পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতীয় পাসপোর্ট, ভোটার কার্ড, আঁধার কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত মাসে ভারতের তামিলনাড়ুতে অভিযান চালিয়ে এক পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে এনআইএ। ইমরান খান নামে ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। শ্রীলঙ্কা থেকে মানুষদের এনে ভারতের বেঙ্গালুরু ও ম্যাঙ্গালুরুতে পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ইমরান ও তার সঙ্গীরা। স্থানীয় পুলিশের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে এই চক্রের তদন্তে নামে এনআইএ।
এরপর ২০২১ সালের অক্টোবরে পাঁচ ভারতীয় নাগরিক- দিনাকরণ, কাশী বিশ্বনাথন, রাসুল, সন্থাম উশেন ও আব্দুল মোহিতুরের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তে কর্মকর্তারা জানতে পারেন, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিশেষ করে কানাডায় ভালো কর্মসংস্থানের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের পাচার করা হতো।