কালিয়াকৈরে তথ্য গোপন রেখে কেন্দ্র সচিব, পরিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ক্ষোভ

আলহাজ হোসেন, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে তথ্য গোপন রেখে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে এসএসসি পরিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ ঘটনার পর সোমবার দুপুরে ওই অবৈধ কেন্দ্র সচিবকে অব্যাহতি দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার ২০২২ সালের এসএসসি পরিক্ষার ৬নং কেন্দ্র গোলাম নবী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলকাছ উদ্দিন অনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য তথ্য গোপন রেখে ৬নং কেন্দ্র সচিব হয়েছেন। ওই কেন্দ্রে ৭টি বিদ্যালয়ের মোট পরিক্ষার্থী ৬১৭ জন এসএসসি পরিক্ষা দিচ্ছে। এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শাখা থেকে ওই কেন্দ্র সচিবের ছেলে ইমদাদুল্লাহ কিবরিয়া এবছর এসএসসি পরিক্ষা দিচ্ছে।

গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV

এসব তথ্য গোপন রেখে নিয়মবহির্ভুতভাবে কেন্দ্র সচিব হন ওই প্রধান শিক্ষক আলকাছ উদ্দিন। শুধু তাই নয়, কেন্দ্র সচিব থাকার সুবাধে তিনি পরিক্ষা চলাকালিন সময়ে তার ছেলেকে অনৈতিকভাবে প্রশ্ন উত্তরে বিভিন্ন সহযোগীতা করেছেন। এছাড়াও তার ছেলের পরিক্ষার খাতার পাতা খালি রেখে পরিক্ষা শেষে পরবর্তীতে তা পুরণ করার অভিযোগ উঠেছে ওই কেন্দ্র সচিব আলকাছ উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

এমন অভিযোগের পরও তিনি সোমবার ইংরেজী ১ম পত্র পরিক্ষায়ও কেন্দ্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কেন্দ্র সচিবের অনৈতিক কাজের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে পরিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ওই কেন্দ্র সচিবের এমন কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক বৃন্দ।

এ ঘটনার পর প্রাথমিক তদন্তে তার বিরুদ্ধে লোকোচুরির মাধ্যমে কেন্দ্র সচিব হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হলে দুপুরে তাৎক্ষনিকভাবে তাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

ছেলের পরিক্ষায় অনৈতিকভাবে সহযোগিতার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত কেন্দ্র সচিব আলকাছ উদ্দিন জানান, এই বিদ্যালয়টি পরিক্ষা কেন্দ্র হলেও পাশে আফাজউদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ ভেন্যুতে আমার ছেলে পরিক্ষা দিচ্ছে। তবে তথ্য গোপন রেখে নয়, বিষয়টি আমি তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখি নাই।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন মোল্লা জানান, শিক্ষা বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী যদি কোনো শিক্ষকের ছেলে-মেয়ে পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করে, তাহলে সেই শিক্ষক পরিক্ষা সংশ্লিষ্ট কোনো কাজে জড়িত থাকতে পারবেন না। কিন্তু ওই প্রধান শিক্ষক তার তথ্য গোপন রেখে সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থীভাবে কেন্দ্র সচিব হয়েছেন। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ওই কেন্দ্র সচিব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button