
বর্তমানে জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্যতম উপায় জন্মনিরোধক পিল। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই আবিষ্কার এককভাবে মানবসমাজে নিয়ে এসেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। প্রয়োজন মত গ্রহণ করা যাবে এবং হরমোনের সাথে সম্পর্কহীন, পুরুষের জন্য এমন একটি জন্মনিরোধক পিল তৈরির সম্ভাবনাকে এখন বাস্তব বলে বর্ণনা করছেন বিজ্ঞানীরা।
গত অর্ধশতাব্দী ধরে পুরুষের জন্মনিরোধক পিলের জন্য অসংখ্য পদ্ধতির প্রস্তাব করেছেন গবেষক ও বিজ্ঞানীরা। তবে তা কোনোটিই ধোপে টেকেনি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অনেক উন্নতি হলেও এত বছরেও আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি পুরুষের জন্য কোনো জন্মনিরোধক পিল।
তবে সম্প্রতি ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে আশানুরূপ ফল পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, পুরুষদের জন্য মুখে খাওয়ার একটি পিল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। যেটি খেলে পুরুষের শুক্রাণুকে কয়েক ঘণ্টার জন্য নিশ্চল করে দেওয়া সম্ভব। পিল গ্রহণের পরবর্তী এক ঘণ্টা পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকবে শতভাগ। তিন ঘণ্টা পর পিলের কার্যকারিতা নেমে আসবে ৯১ শতাংশে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটির কার্যকারিতা সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যাবে।
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের জন্য জন্মনিরোধক পিল কতটা জনপ্রিয় হবে, তা প্রশ্নসাপেক্ষ। এ ছাড়া কনডমের বিকল্প হিসেবে এই পিল ব্যবহার করা হলে এইডসের মতো মরণব্যাধিগুলো ছড়িয়ে পড়বে খুব সহজেই। তবে সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে এই পিল বাজারে আসার পরই। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বাজারে আনা সম্ভব হবে পুরুষের জন্য জন্মনিরোধক পিল।
নারীদের জন্মনিরোধক পিল যেমন হরমোনের সাথে সম্পর্কিত, এটি তেমন নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন পুরুষদের জন্য আবিষ্কার করা এই পিলের সাথে হরমোনের কোনও সম্পৃক্ততা থাকবে না।
এটা টেস্টোস্টেরনে কোনও প্রভাব ফেলবে না এবং এটি ব্যবহারে পুরুষের হরমোন ঘাটতিজনিত কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না। বরং বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ‘শুক্রাণু-সাঁতার’ কাটার প্রক্রিয়া পরিচালিত হয় যে নির্দিষ্ট কোষের মাধ্যমে সেটি একটি সেলুলার সিগন্যালিং প্রোটিন। আর পরীক্ষা চালানো এই পিলটির কাজ হবে সেই প্রেটিনকে বাধা দেয়া।