অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব আদালতের বিচারিক কাজে অংশ নিয়েছেন আইনজীবীরা

মোঃ শাহজাদা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

অবশেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব আদালতের বিচারিক কাজে অংশ নিয়েছেন আইনজীবীরা, ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্যতা

অবশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সকল আদালতের বিচারিক কাজে অংশ নিয়েছেন আইনজীবীরা। এতে করে দীর্ঘ সময়ের জটিলতার অবসান হয়ে আজ মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে প্রান ফিরেছে আদালতঙ্গনে। নারী ও শিশু-১ আদালতের বিচারক মোঃ ফারুক ছুটিতে চলে যাওয়ায় বর্জনের আওতায় থাকা ওই আদালতের কার্যক্রমেও অংশ নিয়েছেন আইনজীবীরা। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২২ টি আদালতের বিচারিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সে সাথে জেলা জজ আদালত ও চীফ জুডিশিয়ালও চিরচেনা রুপে ফিরেছে। সকাল থেকেই বিচারাঙ্গনে বিচারপ্রার্থীদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।

গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান চৌধুরী কানন জানান, আদালতের অচলাবস্থা নিরসনে রবিবার ১২ ফেব্রুয়ারি আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক, স্থানীয় সংসদ সদস্য র,আ,ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, আইন সচিব গোলাম সারোয়াসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আইনজীবীদের বৈঠক হয়। সেখানে তাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশেষ সাধারণ সভা করে নারী ও শিশু-১ আদালত এর বিচারক মোঃ ফারুক ছুটিতে না যাওয়া পর্যন্ত ওই আদালত ব্যতীত সকল আদালতের উপর থেকে বর্জন কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

তবে নারী ও শিশু-১ আদালত এর বিচারক ছুটিতে চলে যাওয়ায় সে আদালতের দায়িত্ব পালন করছেন নারী ও শিশু-৩ আদালতের বিচারক মোঃ রবিউল আলম। আর সেক্ষেত্রে আইনজীবীদের কোন সমস্যা না থাকায় তারা নারী ও শিশু-৩ আদালতেই নারী ও শিশু -১ আদালতের বিচারিক কাজে অংশ নেয়া শুরু করেছেন। এতে সকল আদালতের কার্যক্রমে আইনজীবীরা অংশগ্রহন করায় সকল আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে। এছাড়াও আইনমন্ত্রী জেলা জজের বিষয়ে নমনীয় হতে বলায় সাধারণ সভায় সে বিষয়টি বিবেচনা করে আইনজীবীরা সে আদালত থেকে বর্জন প্রত্যাহার করে নেয়ায় আর কোন জটিলতা থাকছে না।

উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ আইনজীবীরা মামলা দাখিল করতে গেলে বিচারক মোহাম্মদ ফারুক মামলা না নিয়ে আইনজীবীদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করেন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সমিতির সভা করে আইনজীবীরা ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়।

এদিকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৪ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারিরা। এ অবস্থায় জেলা জজ শারমিন নিগার, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোঃ ফারুক ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে ৫ জানুয়ারী থেকে পুরো আদালত বর্জনের লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন আইনজীবীরা। একপর্যায়ে আইনমন্ত্রীর আশ্বাসে জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালত বর্জন অব্যাহত রেখে বাকি সব আদালতের কার্যক্রমে অংশ নেয় আইনজীবীরা।

তবে ৭ ফ্রেব্রুয়ারি ৬ষ্ঠ দফায় বাড়ানো কর্মসূচীর শেষ দিনেও তাদের অপসারণ না করায় আবারো সব আদালত বর্জনের ঘোষনা দেয় আইনজীবীরা। ৮ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত সকল আদালত বর্জন কর্মসূচীর ঘোষনা দেয়া হলেও সৃষ্ট পরিস্থিতিতে নাজির মোমিনুল ইসলামের চাঁদপুরে বদলী ও নারী ও শিশু -১ আদালতের ছুটিতে যাওয়ার পর ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে সকল আদালতের বিচারিক কাজে অংশ নিতে শুরু করেছে আইনজীবীরা।

 

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button