এক পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে রাসেল

মোঃ রাশেদুল ইসলাম, নাটোর প্রতিনিধি

জন্ম থেকেই দুই হাত নেই, ডান পাও নেই। বাঁ পা থাকলেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক ছোট। ছোট থেকে স্বপ্ন দেখেন পড়াশোনা করে বাবা-মার দায়িত্ব নিবেন। তাই কোনো বাঁধাই তাঁকে পিছনে ফেলতে পারেনি, সকল বাঁধাকে পিছনে ফেলে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চান রাসেল মৃধা।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সিংড়া পৌর এলাকার শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পায়ের আঙুলের ফাঁকে কলম রেখে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধা।

গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV

প্রতিবন্ধী পরিক্ষার্থী রাসেল মৃধা সিংড়া উপজেলার শোলাকুড়া মহল্লার দিনমজুর আব্দুর রহিম মৃধার ছেলে এবং শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার ছাত্র।

অভাব-অনটনের মাঝেও প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধার লেখাপড়ার প্রতি আলাদা স্পৃহা দেখে তার দরিদ্র বাবা-মা হাল ছাড়েননি। তার স্বপ্ন পুরণে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চলেছে। সে বিগত দিনে পিএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে। সামনের দিনগুলোও সাফল্যের সাথে এগিয়ে যেতে চান রাসেল।

প্রতিবন্ধী রাসেল মৃধা বলেন, আমার দুটো হাত না একটি পাও নেই। এক পা দিয়ে লিখে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন সামনে ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারি। আমার অনেক ইচ্ছা লেখাপড়া করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে একটি চাকরি করবো। আমার বাবা-মার সকল দায়িত্ব নিব। তারা আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছে। আমি বাবা মা আর শিক্ষকদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।

রাসেল মৃধার বাবা আব্দুর রহিম মৃধা বলেন,শারীরিক সীমাবদ্ধতাতা থাকা শর্তেও আমার ছেলের বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। তার লেখাপড়ার প্রতি অনেক আগ্রহ। দিনমজুরী কাজ করে অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করাচ্ছি। লেখাপড়া শিখে সে একদিন আমাদের মুখ উজ্জল করবে।

শোলাকুড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোশারফ হোসেন বলেন, রাসেল মৃধা এবছর আমার প্রতিষ্ঠান থেকে দাখিল পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। বিগত পরিক্ষা গুলোতেও সে কৃতিত্বের সাথে সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা আশাবাদী রাসেল এবারও ভালো ফলাফল অর্জন করবে। লেখাপড়া শিখে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশ ও জাতির সেবা করতে পারে সেজন্য তার জন্য দোয়া কামনা।

 

 

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button