তিন বছর পর কবর থেকে গৃহকর্মী কিশোরীর লাশ উত্তোলন

মামুনুর রশিদ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

অপমৃত্যু নয়, মেয়েকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে; মায়ের এমন অভিযোগে আদালতের নির্দেশে দাফনের ৩ বছর পর এক গৃহকর্মী কিশোরীর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বরর) দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌস আরার উপস্থিতিতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদীর মন্ডলতলী এলাকার একটি কবরস্থান থেকে ওই কিশোরীর লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে ফরেনসিকে পাঠায় ডিবি পুলিশ।

গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV

২০১৯ সালের ১৬ আগষ্ট রাজধানীর একটি বাড়ীর ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয় ১৩ বছর বয়সী রিয়া আক্তার নামে এক গৃহকর্মী। এ ঘটনায় ধানমন্ডী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। ওই মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে নারাজী দিয়ে ওই কিশোরীর মা কুলসুম বেগম এটিকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার দাবি করেন। পরে ঢাকা এমএম আদালত নং-৮ গত ১লা মে ডিএনএ টেস্ট এর জন্য মরদেহ উত্তোলনের আদেশ প্রদান করেন।

নিহত রিয়া টঙ্গীর আউচপাড়া এলাকার রাজু আহম্মেদ এর মেয়ে। সে টঙ্গী আউচপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। তার নানার বাড়ি লক্ষ্মীপুরে।

জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩ আগস্ট রিয়া ও শিমলা নামে দুই কিশোরীকে গৃহকর্মীর কাজের কথা বলে ধানমন্ডির ৯১নং বাসায় নিয়ে যায় তাদের পরিচিত জাকির হোসেন। এর ৪/৫ দিন পর রিয়া ফোন দিয়ে কান্নাজনিত কন্ঠে বলে মা আমি এ বাসায় ভালো নেই, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।

একই বছরের ১৬ আগস্ট ভোরে একটি প্রাইভেটকারে কয়েকজন লোক গিয়ে রিয়া অসুস্থ বলে জানায়। পরে বাসায় গিয়ে দেখে রিয়া মারা গেছে। এসময় বাসার মালিক মমিনুল ১০ম তলা বিল্ডিংয়ের বেলকুনি দিয়ে শাড়ী বেয়ে নামার সময় রিয়া পড়ে মারা গেছে বলে জানান। পরে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পরের দিন লক্ষ্মীপুর সদরের হামছাদী এলাকায় নিহতের নানার বাড়ীর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহতের মা কুলসুম বেগম বলেন, ন্যায় বিচারের স্বার্থে মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করি। মামলাটি পিবিআই ২০২১ সালের ৭ জুলাই তদন্ত গ্রহন করেন। মামলা তদন্ত কালে বিভিন্ন স্বাক্ষী, জবানবন্দী, ঘটনাস্থলের বিভিন্ন ফুটেজ সংগ্রহ করে আদালতে চলতি বছরের ৩ মার্চ পিবিআই প্রতিবেদন দাখিল করেন। মামলার চলমান প্রক্রিয়ায় প্রতিবেদন উপযুক্ত মনে না করায় আদালত মামলাটি ডিএনএ টেষ্ট করার জন্য ডিবিকে লাশ উত্তোলনের নির্দেশ প্রদান করেন। এসময় তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌস আরা জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে লাশ ময়নাতদন্ত করা হবে।

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button