ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে মা-ছেলেকে হত্যার পর ভারতে পলায়ন! অতঃপর—
আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুরে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে মা-ছেলেকে হত্যার পর ভারতে পালিয়ে যাওয়া আসামি রহমত উল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভারতের কৃষ্ণপুর গ্রামে পলাতক থাকাবস্থায় বুধবার বিকেলের দিকে দালালের সহযোগিতায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুর জেলা পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) আজমীর হোসেন। গ্রেপ্তার রহমত উল্লাহ (২৯) গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার কুশদী গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ৩ জানুয়ারি রাতে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামে রুবিনা আক্তার (২২) নামে এক নারীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ধর্ষণচেষ্টা করেন প্রতিবেশী রহমত উল্লাহ। এসময় রুবিনার সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে শিশুপুত্র জিহাদ (৪) চিৎকার দিলে তাকে গলাচেপে হত্যা করে রহমত। পরে ডাক চিৎকার শুরু করলে রুবিনাকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রহমত। দুজনের মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ তালাবদ্ধ করে রুবিনার মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় সে। ঘটনার ৪দিন পর (৭ জানুয়ারি) পুলিশ গিয়ে ঘরে তালাবদ্ধ অবস্থায় দু’জনের লাশ উদ্ধার করে। এদিকে, এ ঘটনার পর গত ২৩ জানুয়ারি রহমত উল্লাহ নিজেকে আত্মগোপন করতে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে চলে যায়। সেখানে একটি কোমল পানি প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের চাকরিতে যোগ দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমজাদ হোসেন বলেন, নিয়মিত অভিযান পরিচালনা কালে গত ৪ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ থেকে নিহত রুবিনার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রহমতের অবস্থান ও খুনের বিষয়ে জানা যায়। এরপর স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের দালালেরা বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানা এলাকায় রহমতকে পৌঁছে দেন। সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের কথা স্বীকার করেছেন রহমত উল্লাহ ।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামি রহমত উল্লাহকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে এক জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ঝুমন মিয়ার সঙ্গে রুবিনার ঝগড়া চলায় ঘটনার দিন ঘরে ছিলেন না ঝুমন। স্বামী ঝুমনকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়েও কাজ করবে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ৭ জানুয়ারি দুপুরের দিকে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের মসজিদ মোড় এলাকার সিরাজ মিয়ার মেয়ে রুবিনা আক্তার ও তাঁর শিশুপুত্র জিহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সিরাজ মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় সন্দেহজনকভাবে নিহতের স্বামী ঝুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।