মোবাইল ফোনে সম্পর্ক করে ব্লাকমেইলিং, অতঃপর খুন
আতিক রহমান, বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় চাঞ্চল্যকর অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জাকির হোসেন হত্যা মামলার দু’জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ১টি বার্মিজ ছুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, শাজাহানপুর উপজেলার কৈগাড়ী পূর্বপাড়ার মৃত মিলনের ছেলে মোঃ আশরাফুল ইসলাম ওরফে আশা (২৪)। অপরজন একই এলাকার মোঃ শহিদুল ইসলাম খোকনের ছেলে মোঃ মোস্তফা কামাল ওরফে কমল (২৫)।
শনিবার (৮ অক্টোবর) দুপুর ১২ টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী।
এসময় তিনি জানিয়েছেন, সাবেক সেনা সদস্য জাকির হোসেনকে হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যে জড়িত দু’জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত বাকি সদস্যদেরও গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকান্ডে জড়িত পুরুষ ও মেয়ে সদস্যরা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যক্তিদের টার্গেট করে তাদের সাথে বিভিন্ন বাহানায় সখ্যতা গড়ে তুলতো। পরে কৌশলে বিভিন্ন মিথ্যা অজুহাতে মেয়ে সদস্যদের দ্বারা ভূক্তভোগিদের আসামীদের ভাড়া বাসায় ডেকে নিত। এরপর ভূক্তভোগিদের কৌশলে মেয়েসহ ঘরে প্রবেশ করিয়ে মোবাইলে মিসড কল/এসএমএস দিলে অন্যান্য আসামীরা আকস্মিক ভাবে ঘরে ঢুকে পরতো এবং ব্লাকমেইলের মাধ্যমে টাকা আদায় করে জোরপূর্বক আপত্তিকর ছবি তুলে ভয়ভিতী প্রদর্শন করে ছেড়ে দিত।
জানা যায়, ঠিক একইভাবে ঘটনার দিন হত্যার শিকার জাকির হোসেন (৪৫) কে টার্গেট করে উল্লেখিত আসামীরা তাহাদের পলাতক নারী সদস্য আখি (ছদ্মনাম) ও সালমাদের (ছদ্মনাম) মাধ্যমে কৌশলে শাজাহানপুর থানারা কৈগাড়ীর জবানি স্কুলের পাশের একটি ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে রুমের ভিতর ঢোকানোর পরে কৌশলে অনান্য সহযোগি আসামীদের মিসড কল দেয়। ভেতর থেকে সিগনাল পাওয়ার পর গ্রেফতারকৃত আসামীরা তাদের সহযোগী পলাতক আসামীসহ ঘরে প্রবেশ করে। এরপর হত্যার শিকার জাকির হোসেন অসামাজিক কার্যকলাপ করছে মর্মে হুমকি দিতে শুরু করে এবং ডিজিষ্ট জাকির হোসেনের কাছ থেকে নগদ ২ হাজার ৩ শত টাকা এবং বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেয়।
তবে টাকা নেয়ার পর জাকির হোসেনকে ঘরের বাইরে নিয়ে আসেন চক্রটির সদস্যরা। এরপর সে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ আশরাফুল ওরফে আশা (২৪) তাকে ধাওয়া করে পিছন থেকে ছুড়িকাঘাত করে। এতে জাকির হোসেন আহত অবস্থায় দৌড়ে সড়কে চলে আসলে আসামীরা পালিয়ে যায়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আলী হায়দার চৌধুরী জানিয়েছেন, জাকির হোসেন হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ২ জনসহ এই চক্রের সর্বমোট ০৮ জন সদস্য সরাসরি অংশগ্রহন করে। তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামী আশার বিরুদ্ধে এর আগেও অস্ত্র আইনে ১টি মামলা রয়েছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।