লাশের ভয় দেখিয়ে ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে !
আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর(গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুরে কবরের লাশ পুলিশ দিয়ে তদন্ত হবে এমন ভয় দেখিয়ে ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কবির হোসেন নামের এক ইউপি মেম্বার ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য বিরাজ করছে।
সোমবার (৬ জুন) বিকেলের দিকে নুরুল ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগকারীর মোঃ নুরুল ইসলাম গোসিংগা ইউনিয়নের পেলাইদ গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন ফকিরের ছেলে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ১৭ মে রাতের বেলা স্থানীয় ইউপি মেম্বার কবির শেখ মুঠোফোনে মেম্বারের গোসিংগার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর পেলাইদ গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে কবির হোসেন মারা যাওয়ায় তার পরিবারকে ম্যানেজ করতে হবে বলে জানান মেম্বার। ওই রাত তিনটার দিকে মেয়ের জামাইকে ফোন করে ৩ লাখ টাকা দিলে শ্বশুর বেঁচে যাবে বলে জানানো হয় । পরে নুরুল ইসলামের নিজ বাড়ি এসে স্থানীয় তাজউদ্দিন, ওয়াজ উদ্দিন কেরানি ও মেম্বার কবির শেখ মিলেমিশে ৮০ হাজার টাকায় বিষয়টি রফাদফা করে। উপায় না পেয়ে তিনজনের উপস্থিতিতেই তাজউদ্দীনদের হাতে ৮০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেন নুরুল ইসলাম।
অভিযোগকারী নুরুল ইসলাম বলেন, মারা যাওয়া কবিরের লাশের বিষয়ে রাতে আমাকে পুলিশের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। তদন্তের পর মার্ডার মামলায় ফাঁসানোর কথা বলা হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
জানা যায়, গত ১৭ মে রাত সাড়ে দশটার দিকে স্থানীয় কবির হোসেন (৫০) নামের একজন শারীরিক অসুস্থ হয়ে মারা যান। মৃত্যুর আগে নুরুল ইসলামের কাছে চিকিৎসা নিয়েছিলেন তিনি। তবে, কবিরের পরিবারের কোনো অভিযোগ কিংবা আপত্তি না থাকায় পরের দিন ১৮ মে নিহত কবির হোসেনের দাফনকাফন করা হয়।
নিহত কবির হোসেনের ভাই মোতাহার হোসেন বলেন, আমার ভাইয়ের লাশ নিয়ে কয়েকজন ব্যবসা করেছে এ ঘটনা গতকাল শুনেছি। আমাদের পরিবারের কোনো সদস্য কারো কাছ থেকে টাকা গ্রহন করেনি বা গ্রহনের ইচ্ছে নেই। আল্লাহর হুকুমে ভাই মারা গেছে। আগেও আমার ৩ ভাই এভাবেই মারা গেছেন। সেদিন মারা যাওয়া কবির আগে থেকেই শারীরিক অসুস্থ ছিল। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাই মারা যাওয়ায় পর কারো বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ ছিল না। তাই এ ঘটনার বিচার দাবী করছি।
অভিযোগে উল্লেখিত ইউপি মেম্বারের সহযোগী তাজউদ্দীন প্রথমে মুঠোফোনে টাকা নিয়ে মেম্বারকে দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি টাকা সাথে সাথেই মেম্বারের হাতে দিয়েছি। কিন্তু পরের দিন তাজউদ্দীনের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার প্রয়োজনে গোসিংগা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার কবির শেখের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে সরাসরি গিয়ে ওই ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে গেলে তিনি কথা বলতে রাজি না হয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।