
আজ শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। প্রতি বছর এই দিনে স্ট্রোক দিবস পালিত হয়। এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য- ‘না করলে সময়ক্ষেপণ, স্ট্রোক হলেও বাঁচবে জীবন’। বর্তমানে বাংলাদেশে ২০ লাখের বেশি স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগী আছেন বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক এম এস জহিরুল হক চৌধুরী।
বাংলাদেশে হাজারে প্রায় ১২ জন ব্যক্তি স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আর বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ১২ মিলিয়ন মানুষ নতুন করে স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
দেশে স্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে প্রতি হাজারে ১১ দশমিক ৩৯ অর্থাৎ ১২ জন করে স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। ২০১১ সালের গবেষণায় দেখা যায়, হাজারে তিন জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ এই ১০ বছরে স্ট্রোকের রোগী চারগুণ বেড়ে গেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সুমন রানা বলেন, ২০১৯ ও ২০২০ সালে স্ট্রোকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে এক বছরের ব্যবধানে স্ট্রোকে আক্রান্তের হার বেড়েছে দ্বিগুণ।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক গবেষণায় বলা হচ্ছে, স্ট্রোকের জন্য উচ্চ রক্তচাপ ৫০ শতাংশ দায়ী। বাংলাদেশের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৮৯ শতাংশ স্ট্রোকের রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ ছিল। বিশ্বে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেন, কিন্তু আমাদের দেশে নিয়ন্ত্রণ করে কম। অনেকেই নিয়মিত ওষুধ খান না। উচ্চরক্তচাপ হলেই স্ট্রোক করে। দেশের জন্য বড় ঝুঁকি উচ্চরক্তচাপ।
বাংলাদেশে মৃত্যুর প্রধান ১০টি কারণের শীর্ষে আছে স্ট্রোক। বিশ্বের ১৮৮ দেশের মৃত্যুর কারণ-সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে ল্যানসেট। এর পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৫৩ শতাংশ মানুষ উচ্চরক্তচাপে ভুগছে, ২১ শতাংশ মানুষ ধূমপান করে, ১০ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, ২২ শতাংশ বাতাসে ভাসমান বস্তুকণা এবং ৩০ শতাংশ জ্বালানি-সংশ্লিষ্ট দূষণের শিকার।
জীবনযাপন পদ্ধতি ও আচরণগত (ধূমপান, খাদ্যাভ্যাস ও কায়িক শ্রমের ঘাটতি) পরিবর্তন এনে ৯০ শতাংশ স্ট্রোকের ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। রক্তচাপ স্বাভাবিক রেখে রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো যায় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।