অনিয়মই যেন তার কাছে নিয়ম!

আতিক রহমান, বগুড়া প্রতিনিধি

অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করার অভিযোগ উঠেছে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সিহাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঠিকাদারের সাথে যোগসাজশ করে প্রকল্পের টাকা নয়-ছয়, নিয়ম বহির্ভূতভাবে পত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি, উৎকোচের মাধ্যমে ঠিকাদারকে বিধিঃবহির্ভূতভাবে কাজ প্রদানসহ একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও অজ্ঞাত খুঁটির জোড়ে বহাল তবিয়তে আছেন তিনি।

কারণ দর্শাণোর নোটিশ ছাড়া কার্যকর কোন পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত নেয়নি স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর। এর আগে এ প্রকৌশলীর বদলীর কথা শোনা গেলেও সে আদেশ আবার বাতিল করা হয় বলেও নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে।

গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV

জানাগেছে, স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। এঘটনায় তাঁকে কারন দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী সেখ মোহাম্মদ মহসিন। কারণ দর্শানোর নোটিশে প্রাথমিক তদন্তে বগুড়া এলজিইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন মর্মে উল্লেখ করা হয়। প্রধান প্রকৌশলী স্বাক্ষরিত ব্যাখা প্রদানের নোটিশে বলা হয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার দরপত্র আহবানের সময় ২১ দিন হলেও টেন্ডার আইডি নম্বর ৭৩৩৩৫৩,৭৩৩৩৫৪ ও ৭৩৩৩৬৩ এর তিনটি দরপত্রের দুইটি যথাক্রমে ১৮ ও ১৩ দিন সময় বেধে দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়।

পরে উক্ত ভুলের কারনে দুইটি আইডির সংশোধিত দরপত্র পুনরায় আহবান করা হলেও অপর আইডির দরপত্র অজানা কারনে সর্বনিম্ন দরদাতাকে দেয়া হয়। কোনরুপ নিয়ম নীতি না মেনেই এমন কাজ করায় উপজেলা প্রকৌশলী সিহাদুল ইসলামকে এর ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ করা হয়েছে।

এদিকে , উপজেলা প্রকৌশলীর অপসারণ চেয়ে শিবগঞ্জ এলাকায় পোস্টারিং করা হয়েছে। শিবগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন রাস্তার ওয়ালে সাটানো দেখতে পাওয়া যায় এসব পোস্টার। সাটানো পোস্টারে লেখা ” সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এই অস্বচ্ছ ঘুষখোর জামায়াত-বিএনপির দোসর দুর্নীতিবাজ উপজেলা প্রকৌশলী সিহাদুল ইসলামের অতি সত্বর অপসরন চাই।” পোস্টোরে শিবগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণ ও ঠিকাদারদের সৌজন্যে লেখা হলেও এসব পোস্টার কে সাটিয়েছে সে ব্যাপারে কিছু জানা যায় নি।

শিবগঞ্জ উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক শাহাবুদ্দিন শিবলী জানান, গত একবছর আগে শিল্পকলা একাডেমির সরঞ্জাম কেনার সাড়ে তিন লক্ষ টাকার বরাদ্দ হলেও উপজেলা প্রকৌশলী মাত্র ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে অভিযোগ করেন, একই কাজ দুই তিনটা টেন্ডারে দিয়ে প্রকল্পের টাকা আত্মসাত, কিছু পছন্দনীয় ঠিকাদারকে কৌশলে কাজ পাইয়ে দেয়া, ঠিকাদারের ভাড়া গাড়িতে প্রকল্প পরিদর্শন, অফিসে ঠিকমতো না আসাসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। এর আগে ঠিকাদাররা তার বিরুদ্ধে প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন বলেও তিনি জানান। ( বক্তব্যের রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত)

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে প্রকৌশলী মোঃ সিহাদুল ইসলামকে বারবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে মুঠোফোনে এসএমএস দিয়েও তার কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button