লক্ষ্মীপুরে জোড়া খুনের রহস্য উম্মোচন

মামুনুর রশিদ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

জেলা সদরে মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডের সূত্র ধরে নিজ ঘরে স্বামী-স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনার রহস্য উম্মোচন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ। এর আগে আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দেয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV গুগল নিউজে ফলো করুন Mohona TV

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, কামরুল হাসান, রুবেল, জুয়েল, কাউছার হোসেন, আবুল কাশেম খোকন প্রকাশে দুদু মিয়া ও বাহার।

পুলিশ সুপার গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, লক্ষ্মীপুর সদরে জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত কামরুল হাসান পেশায় একজন ইলেকট্রিক মেস্ত্রী। স্থানীয় কাচারী বাড়ী এলাকায় তার একটি দোকান আছে। হাসানের সাথে তার বন্ধু জুয়েল, বাহার, রুবেল ও কাউছার চলাফেরাসহ আড্ডা দিত। একই সঙ্গে হাসানের বাড়ীর পাশের ছইমিঝি বাড়ীর দুদু মিয়াও আড্ডা দিতেন। কাচারী বাড়ী সংলগ্ন এলাকায় আবু ছিদ্দিক ও তার স্ত্রী একাকী বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।

সম্প্রতি সময়ে দুদু মিয়ার ভাতিজা গিয়াস ও আবু ছিদ্দিক তাহার ভাইদের থেকে বাড়ীতে কিছু সম্পত্তি ক্রয় করেন। এ সুবাদে হাসান ও তার বন্ধুদের দুদু মিয়া তথ্য দেয় যে ছিদ্দিকের বাড়ীতে কিছু টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যাবে। তার প্রেক্ষিতে হাসান, রুবেল ও বাহার ওই বাড়ীর জানালার গ্রীল বেয়ে ছাদ দিয়ে দরজার তালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। এসময় হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় দুদুর। পরে তারা ছিদ্দিকের স্ত্রী আতরের নেছা ও ছিদ্দিকের হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। পরে তারা আলমারি ভেঙে কিছু না পেয়ে তাদেরকে (স্বামী-স্ত্রী) জিজ্ঞাসা করতে এসে সাড়া শব্দ না পেয়ে তারা বুঝতে পারেন মারা গেছে তারা। পরে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এরপর ঘটনার একদিন পর দুদু মিয়ার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে তাদের চুপ থাকার জন্য বলে দুদু মিয়া। দুই দিন পর বিষয়টি জানাজানির পর তারা আত্ম গোপনে চলে যায়। পরে তাদের বন্ধু জুয়েল ও কাউছার ঘটনার টাকার ভাগ চান। ভাগাভাগি নিয়ে তাদের মধ্যে বাক বিতন্ডা শুরু হয়। গেলো ৯ জানুয়ারি তারিখ মধ্যরাতে শহরের মাদাম এলাকা থেকে কামরুল হাসানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে প্রেরণ করলে সে ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্ধী দেন। এরপর পুলিশ অন্যদের গ্রেফতার করে।

প্রসঙ্গত: সদর উপজেলার শাকচর গ্রামের নিজ বসত ঘরে গত ১৮ অক্টোবর মধ্য রাতে তালাবদ্ধ ঘর থেকে অর্ধগলিত ও কাপড় মোড়ানো অবস্থায় আবু ছিদ্দিক (৭৩) ও তার স্ত্রী আতেরুন নেছা (৬৫) দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ভাই খোকন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

 

 

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button