লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী হত্যায় স্বামী ও তার সহযোগীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড 

মামুনুর রশিদ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরে স্ত্রী আয়েশা আক্তার লিপিকে হত্যা মামলায় স্বামী হারুন ও তার সহযোগী সোহেলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশও দেন।

আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ দায় দেন। এসময় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নৈশ্যপ্রহরী নুর মোহাম্মদ ও সোহেল নামে দুই আসামীকে মামলা থেকে বেকসুল খালাস দেয় আদালত। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সোহেল আদালতে উপস্থিত থাকলেও পলাতক রয়েছে নিহতের স্বামী হারুন।

দণ্ডপ্রাপ্ত হারুন কমলনগর উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়নের নুর মোহাম্মদের ছেলে এবং নিহত আয়েশা আক্তার লিপির স্বামী। অপর দণ্ডপ্রাপ্ত সোহেল সদর উপজেলার চরভূতা গ্রামের সিরাজ আনসারির ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর দুপুরে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের চর মনসা সুতার গোপটা এলাকার তালগাছ তলা সংলগ্ন একটি ড্রেইনে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। তবে প্রাথমিক ভাবে শ্বাসরোধে হত্যার ধারণা করে ওইদিনই পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জাহাঙ্গির আলম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে এ মামলায় সোহেল নামে দুই যুবককে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এদিকে অজ্ঞাতনামা নারীর মৃতদেহ উদ্ধারের খবরে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহন এলাকার নিলুপা আক্তার ও তার স্বামী আসলাম মিয়া লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় এসে নিহতের ছবি দেখে তাদের মেয়ে আয়েশা আক্তার বলে সনাক্ত করেন। পরে এ ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য নিহতের মা নিলুপা আক্তার আদালতে আবেদন করেন। পরবর্তিতে আদালতের নির্দেশে পুন:তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৮ সালের ২১ আগস্ট নিহতের স্বামী হারুনসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানীতে ১৩জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এ রায় দেন।

লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button