বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
প্রায় দেড় ঘণ্টা শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে এ রায় দেন আদালত। এসময় আইনজীবীরা আদালতের ভেতর ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
আদেশের পর আইনজীবী ও ভক্তরা তার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিয়ে আদালত কক্ষের বাইরে বিক্ষোভ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী স্বরূপ কান্তি নাথ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আদালত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। তবে আদালত তার সামাজিক এবং ধর্মীয় অবস্থান বিবেচনা করে তার জন্য ডিভিশন মঞ্জুর করেছেন।’
‘চিন্ময় কৃষ্ণ দাস যাতে কারাগারের ভেতর ধর্মীয় রীতি মেনে খাবার খেতে পারেন, আদালত সে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন’, বলেন তিনি। এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় তাকে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়।
আদালত কক্ষে প্রবেশের সময় একদল আইনজীবী স্লোগান দিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কোর্ট রুমের দিকে নিয়ে যান। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে চিন্ময়ের উপস্থিতিতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম শুরু করেন। সেসময় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস আইনজীবীদের আদালতের ভেতর কোনো স্লোগান না দেওয়ার অনুরোধ করেন।
সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) এ এ এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে।’
গত ৩১ অক্টোবর বিএনপি নেতা ফিরোজ খান (পরে বহিষ্কৃত) বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ার পর নগরের নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্টে স্তম্ভের ওপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, যা এখনো সেখানে রয়েছে। ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে লালদীঘির মাঠে একটি মহাসমাবেশ হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো মানুষ ওই সমাবেশে যোগ দেন।
এই মামলার পর ইসকন প্রবর্তক ধাম অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রসঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি মামলাটি সনাতনীদের আট দফা দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হিসেবে আখ্যা দেন। ওই বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘৫ আগস্টের পর সনাতনীদের ওপর চালানো হামলা-নির্যাতনের প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন। এই আন্দোলন বর্তমান সরকার কিংবা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়।’