তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, ডুবছে নিম্নাঞ্চল

মোহনা অনলাইন

উজানের ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিপাতে উত্তরের তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। এতে লালমনিরহাটসহ আশপাশের জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টার পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড হয়েছে ৫২.১৮ মিটার, যা বিপৎসীমা (৫২.১৫ মিটার) থেকে ৩ সেন্টিমিটার উপরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে রোববার সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানির সমতল ছিল ৫২.০৯ মিটার, বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচে। একই সময় কাউনিয়া পয়েন্টে পানির সমতল ছিল ২৮.৯৭ মিটার, যা বিপৎসীমা (২৯.৩০ মিটার) থেকে ৩৩ সেন্টিমিটার নিচে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারসহ উত্তরের কয়েকটি নদীর পানি আরও বাড়তে পারে এবং বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারি, রংপুর ও কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

তিস্তাপাড়ের গোবর্দ্ধন গ্রামের বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গতকাল সকাল থেকেই পানি দ্রুত বাড়ছে। চরাঞ্চলের রাস্তা-ঘাট ডুবে গেছে, মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।’ ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের দিনমজুর এনামুল কবির জানান, ‘নিচু এলাকায় পানি ঢুকে পড়ায় অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পশুপাখি, শিশু, বৃদ্ধ সবাই চরম দুর্ভোগে আছে। আমাদের বাড়িতেও পানি উঠেছে, কিন্তু এখনও কোনো সহায়তা পাইনি।’

সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর ইসলাম জানান, ‘আমার ইউনিয়নে প্রায় দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দি। জরুরি ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন।’

তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টের পানির লেভেল পরিমাপক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খোলা হয়েছে।’

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, ‘ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে পানির প্রবাহ বেড়েছে। তবে আপাতত বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।’

Exit mobile version