পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি কুকুরছানাকে বস্তাবন্দি করে পানিতে ফেলে হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা নিশি আক্তারের (৩৮) জামিন দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে পাবনা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের আমলী আদালত ২-এর ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলাম ৫ হাজার টাকা বন্ডে তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে গত বুধবার বিকেলে তার জামিন নামঞ্জুর করে দুই বছরের বাচ্চাসহ তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
নিশির স্বামী ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন বলেন, আমার ছোট ছেলের বয়স দুই বছর।মায়ের সঙ্গে তাকেও কারাগারে থাকতে হয়েছে। আমরা আগেই জামিন আবেদন করেছিলাম। কিন্তু শুনানি হয়নি। আজ শুনানি শেষে জামিন হয়েছে।
অ্যাডভোকেট কণিকা বলেন, এখন মামলা তদন্ত হবে, তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল হবে। তখন আমরা যদি দেখি অভিযোগপত্র বা তদন্ত সঠিকভাবে হয়নি, তখন আমরা না রাজি আবেদন সহ পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেব। আমরা চাই তদন্ত সঠিকভাবে হোক, এই বিচারের শাস্তি নিশ্চিত হোক।
পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের (PAW) স্থানীয় প্রতিনিধি প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তাকারী হিসেবে আমরা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে একজন আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। সঠিক বিচারের জন্য আগামীতে এই মামলাটি চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের প্রতিবাদটা হলো নিষ্ঠুরতা বা হিংস্রতার বিরুদ্ধে। ওই আসামির বিরুদ্ধে নয়। নিষ্ঠুরতা ও হিংস্রতার বিরুদ্ধে একটা শাস্তি হলে অনেকেই সতর্ক হবে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের একটি কোনায় থাকতো টম নামের একটি কুকুর। এক সপ্তাহ আগে টম আটটি বাচ্চা প্রসব করে। গত সোমবার সকাল থেকে তার ছানাগুলো না পেয়ে পাগলপ্রায় অবস্থায় কান্না আর ছুটাছুটি করতে দেখা যায় মা কুকুরকে।
পরে উপজেলা পরিষদের কর্মচারীরা জানতে পারেন, ঈশ্বরদী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন এর স্ত্রী জীবন্ত ৮টি কুকুর ছানাকে বস্তার মধ্যে বেঁধে রোববার রাতের কোনো এক সময় ফেলে দেন উপজেলা পরিষদের পুকুরে। পরদিন সোমবার সকালে পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় কুকুরছানাগুলোর মরদেহ।



