আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী প্রার্থীদের ঋণখেলাপি তথ্য সঠিক, নির্ভুল ও পূর্ণাঙ্গভাবে প্রস্তুত করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নির্বাচনকালীন ঋণতথ্য যাচাইকে স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য করতে ব্যাংকগুলোকে তথ্য হালনাগাদ ও যথাযথ রিপোর্টিংয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি সিআইবি কর্তৃপক্ষ ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ডেকে নির্দেশনা দেয়। রোববার ব্যাংকার্স সভায়ও গভর্নর আহসান এইচ মনসুর একই নির্দেশনা পুনর্ব্যক্ত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রার্থীদের খেলাপি অবস্থা নির্ধারণে সঠিক খেলাপির তথ্য, ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ পরিচিতিমূলক তথ্য, সকল স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির তথ্য এবং প্রতিটি অ্যাকাউন্টের হালনাগাদ রিপোর্ট নির্বাচনকালীন ডেটাবেইজকে শক্তিশালী করবে। এ কারণেই হালনাগাদ তথ্যের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বিআরপিডি ও পরিদর্শন বিভাগের ঋণশ্রেণীকরণ নীতিমালা অনুযায়ী সব ঋণতথ্য সঠিক শ্রেণিতে রিপোর্ট করতে হবে। ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা কোনো ঋণ সিআইবিতে রিপোর্ট না থাকলে তা দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, ক্রেডিট কার্ডের নন-ট্রানজেকশনাল ফি বা চার্জ (যেমন বার্ষিক ফি, লেট ফি ইত্যাদি) বকেয়া থাকলেই কাউকে খেলাপি দেখানো যাবে না। শুধুমাত্র এ ধরনের ফি বকেয়ার কারণে কোনো গ্রাহককে সিআইবি ডেটাবেইজে খেলাপি দেখানো হয়ে থাকলে শ্রেণিকরণ সংশোধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
চার নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে– প্রথমত, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ শ্রেণীকরণ নীতিমালা ও পরিদর্শনের ভিত্তিতে দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক শ্রেণিমানে রিপোর্ট করতে হবে। এ ছাড়া সিআইবি ডেটাবেজে ব্যাংকগুলোর সব ঋণের তথ্য রিপোর্টিং নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কারও ‘আনরিপোর্টেড’ বা গোপন ঋণ থাকলে তা সিআইবি ডেটাবেজে থাকতে হবে।
দ্বিতীয়ত, ক্রেডিট কার্ডের নন-ট্রানজেকশনাল ফি অপরিশোধিত থাকলে গ্রাহককে খেলাপি করা যাবে না। ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন-সংক্রান্ত দায় না থাকা সত্ত্বেও শুধু অপরিশোধিত নন-ট্রানজেকশনাল ফির কারণে সিআইবিতে কেউ খেলাপি থাকলে শ্রেণিমান সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
তৃতীয়ত, সিআইবি ডেটাবেজে ঋণগ্রহীতাসহ সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তথ্য হালনাগাদ করার বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নিতে হবে। এ ছাড়া সব স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তথ্য যথাযথভাবে সিআইবি ডেটাবেজে রিপোর্ট করতে হবে।
চতুর্থত, খেলাপি ঋণের কারণে মহামান্য হাইকোর্টে ঋণগ্রহীতার দায়ের করা সিআইবি-সংশ্লিষ্ট মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আইনজীবী নিয়োগসহ যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আর যে সব মামলা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে এবং ইতোমধ্যে খারিজ হয়েছে, সে বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সিআইবিকে অবহিত করতে হবে।