বরগুনায় চাঞ্চল্যকর সুজন হৃদয় হত্যা মামলায় জড়িত অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৯ শিশুর রায় ঘোষণা করেছেন বরগুনা শিশু আদালত। মামলার অপ্রাপ্ত বয়স্ক ১৯ আসামির মধ্যে ১২ জনকে দশ বছরে আটকাদেশ, চারজনকে ৭ বছরের সাজা ও অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় তিন জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন বরগুনা শিশু আদালত।
বরগুনা জেলা কারাগারের সেফহোম থেকে ১৬ শিশুকে সকাল ৯টায় আদালতে হাজির করা হয়। বাকি ৩ শিশু জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে। বরগুনার শিশু আদালতের বিচারক ও সিনিয়র জেলা জজ মশিউর রহমান খান এ রায় ঘোষণা করেন। ১২ জন আসামী ১০ বছর মেয়াদে আটকাদেশকৃতরা হলেন ১. ইউনুছ কাজী অরফে ইউনুছ, ২. মো: রানা আকন, ৩. মো: ইমন হাওলাদার, ৪. মো: জুয়েল কাজী, ৫. মো: নয়ন হাওলাদার (পলাতক), ৬. মো: সজিব (পলাতক), ৭. নাজমুল শিকদার , ৮. রাইয়ান বিন অন্তর অরফে অন্তর, ৯. সিফাত ইসলাম (পলাতক), ১০. মো: মোশারেফ, ১১. মো: সাইফুল মৃধা ,১২. মো: রাব্বি।
এদিকে ৪ জন আসামী ৭ বছর মেয়াদে আটকাদেশকৃতরা হলেন ১. মো: সাগর গাজী, ২. মো: সাইফুল কাজী, ৩. সোহাগ কাজী , ৪. মো: ফাইজুল ইসলাম। এছাড়া অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন তিন জন। তারা হলেন ১. মো: শফিকুল ইসলাম, ২. মো: নাঈম কাজী, ৩. মো: রবিউল ইসলাম। এসময় আসামীদের স্বজনদের আহাজারীতে ভারি হয়ে উঠেছে আদালত প্রঙ্গন।
জানা যায়, ২০২০ সালে ২৫ মে ঈদের দিন বিকেলে বরগুনা সদরের গোলবুনিয়া এলাকায় নোমান কাজী, ইউনুস কাজীসহ ২৮ জন মিলে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করে কিশোর সুজন হৃদয়কে। পরের দিন নিহত সুজন হৃদয়ের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। বরগুনা থানা পুলিশ ওই বছরের ১৬ নভেম্বর ১৬ জন কিশোর ও ৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক আসামির বিরুদ্ধে পৃথক দুটি চার্জশিট দাখিল করেন। পরে বাদির নারাজির প্রেক্ষিতে বিচারক আরো ৩ কিশোরসহ ১৯ জনের নামে চার্জ গঠন করেন। পরে এই মামলায় ১৮ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে।
বরগুনা শিশু আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শিশু আইন ২০১৩ অনুযায়ী ১২ জন কিশোরকে সবোর্চ্চ সাজা ১০ বছর ৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও ৩ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। আদালতে আমরা সফলভাবে আসামিদের বিরুদ্ধে ৩০২ ও ৩৪ ধারায় সাক্ষ্য প্রমাণ দিতে পেরেছি। এ রায়ে খুশি বাদি পক্ষের আইনজীবিরা।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন তারা রায়ে অসন্তুষ্ট। তাদের মক্কেলরা ন্যায়বিচার পায়নি। সাত কার্যদিবসের মধ্যেই হাইকোর্টে আপিল করার কথাও জানান তারা।