Site icon Mohona TV

শ্রীপুরে বোতলজাত তেল উধাও! খোলা সয়াবিন তেলের লিটার ২০০ টাকায় বিক্রি!

আলফাজ সরকার আকাশ

শ্রীপুর(গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ-

গাজীপুরের শ্রীপুরে বোতলজাত সয়াবিন তেল সংকট অজুহাতে বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কিছু দোকানে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হলেও দাম নেওয়া হচ্ছে লিটারে ২০০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁদের মজুতে নেই সয়াবিন তেল। তবে ক্রেতারা বলছেন, তেল সরিয়ে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সব বাজারে বোতলজাত তেল সহজে মিলছে না। খোলা তেল মিললেও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে।

প্রতি লিটার খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। বুধবার বিকেল ও বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত শ্রীপুর সদর ও আশপাশের বাজারের দোকানগুলোতে গিয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল না থাকার বিষয়টি জানা যায়। তবে, কয়েকটি দোকানে মাত্র তিন থেকে চার বোতল করে সয়াবিন তেল দেখা গেছে। দোকানিরা ক্রেতাদের সয়াবিন তেলের সঙ্গে আটা, চা–পাতা ও সরিষার তেল কিনতে বাধ্য করছেন। এদিকে, বেশির ভাগ দোকানে বাড়তি ভোগ্যপণ্যসহ সয়াবিন তেল অর্ডার করলেও দোকানিরা তা সরবরাহ করতে পারছেন না। অনেক দোকানি বোতলজাত তেল বিক্রি করছেন না।

শ্রীপুর উপজেলার বৃহৎ তেলের ডিলার সমির সাহা যিনি এ কে ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে তিনি জানান, গত ১৫ দিন ধরে কোম্পানিগুলো তেল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। আগের কিছু তেল ছিল সেটা দিয়ে এক সপ্তাহে বিক্রি করা হয়েছে। এখন তেল নেই। তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

তেল কিনতে এসে তেল না পেয়ে নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন বরমী এলাকার রুহুল আমিন। তিনি বলেন, এটা আজব দেশ। হঠাৎ করে বাজার থেকে তেল উধাও হয়ে গেল, এটা কোনো কথা। প্রত্যেক ব্যবসায়ীর কাছে সয়াবিন তেল আছে। কিন্তু কেউ বিক্রি করছেন না। তেল মজুত রেখে মানুষকে জিম্মি করে তেলের দাম বাড়ানোর কৌশল শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনের উচিত এসব অসাধু ব্যবসায়ী ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।

শ্রীপুর বাজারের শরিফ স্টোরের মালিক শরিফ মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন আমার দোকানে কমপক্ষে ৩০ লিটার বোতলজাত তেল বিক্রি হয়। অথচ চার-পাঁচ দিন ধরে পাইকারি দোকানদারদের কাছে তেলের অর্ডার দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় গত সোমবার থেকে ক্রেতা এলেও তেল বিক্রি করতে পারছি না। ক্রেতারা তেল কিনতে এসে নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

’ শ্রীপুর কলেজ পাড়া এলাকার খানাপিনা রেস্টুরেন্টের মালিক মোঃ মাহবুবুল আলম বলেন , ‘সয়াবিন তেলের দাম যা–ই হোক রেস্টুরেন্ট চালাতে গেলে তেল তো লাগবেই। অথচ দোকানে দোকানে ঘুরে দু-তিন দিন ধরেও তেল পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আজ সকালে আমার এক পরিচিত দোকানির কাছে গেলে তিনি বলেন, প্রতি লিটার ২৫0 টাকা বেশি দরে তেল নিতে হবে ।

পৌর এলাকার মধ্য বাজারের সৈনিক স্টোরের স্বত্বাধিকারী আসাদুল্লাহ বলেন, এক সপ্তাহ ধরে বোতলজাত তেলের সংকট চলছে। বোতলজাত তেল নিতে গেলে সরবরাহকারীরা শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন। এক কার্টনে এক লিটারের বোতলজাত তেলের ১৮টি বোতল থাকে। এক কার্টন তেল কিনতে হলে ৩ কাটন পানি কিংবা ৫ কাটন মসলা কিনতে হবে। যেখানে তেল দরকার, সেখানে পানি কিংবা মসলা নিয়ে কী করবেন? এছাড়াও চাহিদানুযায়ী তেল দিচ্ছে না তারা।

এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবদুল জব্বার মন্ডল মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে জানান, কোনো ব্যবসায়ী তেল মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করলেই কেবলমাত্র তারা অভিযান চালানো সম্ভব। কিন্তু বাজারে যদি ঘাটতি থাকে তাহলে সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই। তারপরও অভিযানের মাধ্যমে মজুদদার খুঁজে বের করে তাঁদের শাস্তি কিংবা জরিমানা করা হবে।

এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার প্রয়োজনে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Exit mobile version