দেশের বৌদ্ধ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয় তীর্থস্থান রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে বেইন ঘর ও সুতা কাটার মধ্যদিয়ে মহামতি বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে শুরু হয়েছে দু’দিনব্যাপী ৪৯তম কঠিন চীবর দানোৎসব।
বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর ২০২২) ৩টায় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কাছ থেকে পঞ্চশীল গ্রহণের পর মহাপরিনির্বাণপ্রাপ্ত মহাসাধক শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের শিষ্যমন্ডলী ও চাকমা সার্কেল ব্যারিষ্টার দেবাশিষ রায় বেইন ঘর ও চড়কায় তুলা থেকে সুতা কেটে বেইন বুনন কাজের উদ্বোধন করেন রাণী যেন যেন।
পরে বেইন ঘর পরির্দশন শেষে সূত্রপাঠ করে করেন, মহাপরিনির্বাণপ্রাপ্ত মহাসাধক শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের শিষ্যমন্ডলী। এ সময় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুুইপ্রু চৌধুরী, রাজবন বিহার পরিচালনা কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি গৌতম দেওয়ান, নিরূপা দেওয়ান, এ্যাডভোকেট সুষ্মিতা চাকমাসহ উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর পর শুরু হয় ২৪ ঘন্টার মধ্যে চীবর প্রস্তুতের আনুষ্ঠানিকতা। এবার প্রায় দুইশত বেইনে ৬ শতাধিক দায়ক-দায়িকা অংশ নেয় কঠিন চীবর প্রস্তুতের কাজে। সুতা সিদ্ধ ও রং করা, সুতা টিয়ানো, সুতা শুকানো, সুতা তুম ও নলীতে ভরা, বেইন টানা বেং বেইন বুননের মধ্যদিয়ে বৃহস্পতিবার সারা রাত অতিক্রম করবেন দায়ক-দায়িকারা।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চলে চীবর প্রস্তুত। আর এভাবেই ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রস্তুত করা হয় এই পূর্ণময় চীবর রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবিরের হাতে কঠিন চীবরটি উৎসর্গের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় তীর্থস্থান রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে কঠিন চিবর দানোৎসব।
এদিকে, দেশের বৌদ্ধ ধর্মীয় স¤প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয় তীর্থস্থান রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসবে তিন পার্বত্য জেলাসহ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যোগ দিতে এসেছে অগণিত পুণ্যার্থী। দানোৎসবে কানায় কানায় ভরে গেছে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার এলাকা। চার দিক পাহাড়ি-বাঙালীর মিলিন মেলায় পরিণত হয়েছে।
অন্যদিকে, রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিরীর পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা জোড়দার করা হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষরা যাতে সুষ্ট সুন্দর পরিবেশে উৎসব পালন করতে পারে সে বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।