Site icon Mohona TV

কবিরাজের কাছ থেকে ওষুধ আনতে গিয়ে নিখোঁজ, ৪ দির পর বনের ভিতর মিলল মরদেহ

গাজীপুরের সদর উপজেলার রাজেন্দ্রপুর ভাওয়াল গজারি বন থেকে নাজমুল হাসান (১৫) নামে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ বলছে মরদেহের গলায় ফাঁস লাগানোর চিহ্ন পাওয়া গেছে। পরিবার বলছে, একদিন আগে একটি মোবাইল নাম্বার থেকে টাকা দাবি করা হয়েছিল।

রোববার (৬ নভেম্বর) দুপুরের দিকে লাশ উদ্ধারের খবর ওই কিশোরের পরিবারকে জানানো হয়েছে বলে নিহতের বড় ভাই আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান।

গত বুধবার কবিরাজের কাছে ওষুধ আনতে গিয়ে সে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনা জানিয়ে শ্রীপুর মডেল থানায় একটি সাধারন ডায়রি করা হয়েছিল। নিহত কিশোর নাজমুল হাসান গাজীপুর ইউনিয়নের নগড় হাওলা গ্রামের কালু মিয়ার ছেলে। সে পাশের আরিফ মডেল একাডেমির সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

নিহতের স্বজনরা জানান, গত করোনাকালে পড়াশুনা ছেড়ে দেয় নাজমুল। ২০১৫ সালে তাদের মা মারা যায়। তিন ভাই বোনের মাঝে সে ছোট। করোনার পর থেকে বাড়িতেই থাকতো সে। বাড়ি আর পাশের মসজিদে নামাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকত সে। বেশ কিছুদিন ধরে সে প্রস্রাবের জটিলতায় ভোগছিল। এ নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় ছিল সে। বিভিন্ন স্থানে গিয়ে কবিরাজি ওষুধও সংগ্রহ করেছে সুস্থ্য হতে। বুধবার বাড়ি থেকে ১৫ শ টাকা নিয়ে ভালুকায় এক কবিরাজের কাছে যায় ওষুধ আনতে। সেই থেকে সে নিখোঁজ হয়।

নিহতের বড় ভাই আমিনুল ইসলাম জানান, প্রায় সময় সে মন মরা অবস্থায় থাকতো। সবার সাথে কম কথা বলত। পরে জানতে পারি সে প্রশ্রাব ও পুরুসাঙ্গ নিয়ে সমস্যায় ভোগছে। লজ্জায় সে সবাইকে এ বিষয়টি বলতে পারছিলনা। বুধবার ওষুধ আনতে যাবে বলে বাড়ি থেকে বের হয়। আমার কাছ থেকে কিছু টাকাও নেয়। পরে দুই দিন পার হয়ে গেলেও সে বাড়ি ফিরছিলনা। এ নিয়ে আমাদের মাঝে দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। তিনি বলেন সে নিয়মি ভালুকার সিডোস্টর এলাকার এক কবিরাজের (কবিরাজ আমির হোসেন) কাছ থেকে হারবাল ওষুধ এনে সেবন করতো বলে আমরা জেনেছি। তার সাথে ফোনে নিয়মিত যোগাযোগও রাখত।

তিনি আরও বলেন দুদিন আগে একটি ফোন নাম্বার থেকে আমাদের কাছে টাকা চাওয়া হয়। তারা বলে তোমাদের ভাইকে বাঁচাতে হলে পাঁচ হাজার টাকা লাগবে। টাকা না দিলে তার কিডনি বিক্রি করে দিবো। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিষয়টি দ্রুত সময়ে পুলিশকে জানানো হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাননি। আজ ছোট ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেল।

গাজীপুরের মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বলেন, গতকাল ভাওয়াল গজারি বনের ভেতর গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

author avatar
Editor Online
Exit mobile version