Site icon Mohona TV

ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত রক্তাক্ত ফেব্রুয়ারি

ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত রক্তাক্ত ফেব্রুয়ারি

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি,আমি কি ভুলিতে পারি। শুরু হলো মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত রক্তাক্ত ফেব্রুয়ারি। মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা’র স্বীকৃতি আদায়ের সংগ্রামে এ মাস ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার উন্মেষকাল।

দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে ভাগ হয় ভারতীয় উপমহাদেশ। একদিকে ভারত, অন্যদিকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের নিয়ে গঠন হয় পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান। এর পরপরই পাকিস্তানি শাসকরা ঘোষণা দেয়, উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিবাদী তরুণরা সেদিন তাদের মুখের ওপর জানিয়ে দিয়েছিল, ‘না’। তার পরই স্লোগান ওঠে,রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই। শুরু হয় বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলন। যা দ্রুতিই ছড়িয়ে যায় বাংলার আনাচে কানাচে।

১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভাষা আন্দোলন তুঙ্গে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু সরকারি বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে ২১শে ফেব্রুয়ারি রাস্তায় নামে প্রতিবাদী জনতা। পাকিস্তানি পুলিশ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত,শফিউল, জব্বারসহ আরো অনেকে। কিন্তু আন্দোলন থামাতে পারেনি শাসকের বুলেট।

রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা। এরই পথ ধরে শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন। আর একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

ফেব্রুয়ারি শোকাবহ হলেও এ মাসের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। পৃথিবীর ইতিহাসে বাঙালিই একমাত্র জাতি, যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিল। মাতৃভাষার জন্য বাংলার দামাল সন্তানদের এ আত্মত্যাগ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর। এদিন ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকারিভাবে পালন হচ্ছে দিনটি।

author avatar
Editor Online
Exit mobile version