Site icon Mohona TV

মসজিদের সামনে থেকে অটোরিকশা চুরি! কাঁদছেন এক পা হারানো রশিদ

মসজিদের সামনে থেকে অটোরিকশা চুরি কাঁদছেন এক পা হারানো রশিদ

জীবিকা নির্বাহের একমাত্র বাহন অটোরিকশাটি মসজিদের সামনে রেখে বৃহস্পতিবার আসরের নামাজ পড়তে যান দুর্ঘটনায় পা হারনো আব্দুর রশিদ। নামাজ শেষে এসে অটোরিকশা দেখতে না পেয়ে নানা জায়গা খোঁজ করেন। এতে অসহায় হয়ে পড়েছেন, কেঁদে কেঁদে আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় চুরি যাওয়া অটোরিকশার খোঁজ করছেন। রশিদের এমন অসহায়ত্ব দেখে কাঁদছে সাধারণ মানুষও।

এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটে বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার মাওনা চৌরাস্তার পুকুর পাড় জামে মসজিদের সামনে

শারিরিক প্রতিবন্ধী আব্দুর রশিদ (৩০) সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার পুরান নোয়াকোট গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে। তিনি তিন মাস আগে পরিবার নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর শহরের তাজুর বাড়িতে ভাড়া থেকে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।

আব্দুর রশিদ জানায়, ছোট বয়সে নৌকাতে করে নানার বাড়ি যাচ্ছিলেন। এসময় নৌকার ইঞ্জিনের সাথে লেগে বাম পা হারান। সব সময় মানুষের কাছে ছোট হয়ে থাকতে হয়েছে। বাড়ির পাশে একটি চায়ের দোকান দেন, পাথর ভাঙ্গার শ্রমিকরা মূলত তার কাস্টমার ছিল। এক সময় পাথর ভাঙ্গা বন্ধ হয়ে বিপাকে পড়তে হয় তাকে। পরে এলাকা ছেড়ে পরিবার নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে এসে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ৯০হাজার টাকায় একটি অটোরিকশা কিনেন। অটোরিকশা কেনার মাস তিনেকের মধ্যে ব্যাটারি নস্ট হয়ে গেলে কর্মহীন হয়ে পরে সে। স্থানীয়দের পরামর্শে সাপ্তাহিক ১৫শ টাকা কিস্তিতে আশা এনজিও থেকে ৬০হাজার টাকা ঋণ নিয়ে অটোরিকশার ব্যাটারি কিনে তা সচল করেন। অটোরিকশা চালাতে থাকেন।

তিনি বলেন, আমি সারাদিন অটেরিকশা চালালেও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি। অটোরিকশা চালাতে চালাতে যখন নামাজের সময় হয় আমি আশপাশের মসজিদে নামাজ আদায় করি। বৃহস্পতিবারও মসজিদের সামনে অটোরিকশা রেখে নামাজে গিয়েছিলাম। চার রাকাত নামাজ শেষ করে এসে দেখি অটোরিকশাটি নেই। এ রিকশাটিই ছিল আমার আয়ের প্রধান উৎস।

ওই সময় একই মসজিদের নামাজ আদায় করছিলেন বুলবুল হাসান। তিনি জানান, প্রায়ই তিনি এ মসজিদে নামাজ আদায় করেন। আমরা একসাথে নামাজ আদায় করি। নামাজ এসে যে অটোরিকশা হারাতে হবে এটা মানা খুব কস্টকর বিত্তবানদের তার পাশে দাঁড়ানো উচিত।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনজুরুল ইসলাম মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। তিনি যদি শ্রীপুরের ভোটার হয়ে থাকেন তাহলে সমাজসেবা অফিসে আসলে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবী ও সমাজকর্মীরা তার সহযোগীতায় এগিয় আসা উচিৎ।

author avatar
Editor Online
Exit mobile version