Site icon Mohona TV

আবুধাবির শারজাতে অগ্নিকাণ্ডে ঘুমন্ত অবস্থায় দগ্ধ হয়ে সেনবাগের ৩ জন নিহত 

আবুধাবির শারজাতে অগ্নিকাণ্ডে ঘুমন্ত অবস্থায় দগ্ধ হয়ে সেনবাগের ৩ জন নিহত

আবুধাবির শারজাতে একটি সোফা ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকাণ্ডে ঘুমন্ত অবস্থায় দগ্ধ হয়ে নোয়াখালী সেনবাগের ৩ জন প্রবাসী নিহত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ মে) ভোর চারটার সময় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে নিহতের পরিবারের লোকজন জানিয়েছে।

নিহতরা হলেন উপজেলার ডমুরুয়া ইউপির পলতি তারাবাড়ীয়া গ্রামের সাংবাদিক আবু তাহের পাটোয়ারী বাড়ীর মো: ইউছুফ (৪৩), একই এলাকার বড়বাড়ীর তারেক হোসেন বাদল( ৪০) ও পলতি হারিছ মিয়ার বাড়ীর মো: রাসেল (৩০)।

মঙ্গলবার সকাল ৭ টায় তিনজনের পরিবার পরিজন  অগ্নিকাণ্ডের  ঘটনা জানতে পারে। বেলা ১১ টায় নিহত ইউছুপের ছোট ভাই ইমরান হোসেন আবুধাবি থেকে তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করার পর থেকে পরিবার গুলোতে কান্নার রোল পড়ে। এ খবর এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে  শত শত নারী পুরুষ ও স্বজনরা তিন বাড়ীতে ভীড় করতে দেখা যায়।

নিহত ইউছুপের ছোটভাই ডা: গোলাম রসুল মোহনা টেলিভিশন কে জানান, ২৫ বছর ধরে  তার বড় ভাই মো: ইউছুপ  জীবিকার সন্ধানে আবুধাবিতে পাড়ি জমায়। একবছর আগে সে আবুধাবির শারজাহতে সামাইয়া পাঁচ নম্বর এলাকায় ধার দেনা করে একটি সোফা ফ্যাক্টরীর ব্যবসা শুরু করে। এতে এলাকার বেশ কয়েক জনকে  তার প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় তারা চার জন ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলো। মুহুর্তের মধ্যে ফ্যাক্টরী পুড়ে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয় এবং তারা চারজনই দগ্ধ হয়ে ছাই হয়ে যায়। পাশে তার অপর ভাই আনোয়ার হোসেনের ফ্যাক্টরীও পুড়ে ভস্মীভূত হয়। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

নিহত ইউছুপের ভাইজি রিতা জানান, জুলাই মাসে চাচা দেশে আসার কথা ছিলো। তার মিলন (২২) ও সিফাত (১৩) নামে দুই সন্তান পিতাকে হারিয়ে স্তব্দ। নিহত ইউছুপের শতবর্ষী মা মহববতের নেছা পুত্র শোকে বার বার মুচ্ছা যান।

নিহত বাদলের পিতা মীর আহাম্মদ মোহনা টেলিভিশনকে জানান, ৮ মাস আগে পরিবারের অভাব অনটন গোছাতে বাংলাদেশ থেকে ইউছুপের ফ্যাক্টরীতে কাজ নেয়। বাদলের দুই ভাই প্রতিবন্ধী। তার সাজ্জাদ, জাহিদ ও আবীর নামে তিন ছেলে রয়েছে। বাদলের  নির্মম মৃত্যুতে  অসহায় পরিবারটি নি:শ্ব হয়ে পড়লো। পুত্র শোকে পিতা মীর আহাম্মদ ও মাতা পেয়ারা বেগম বার বার অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

সন্ধ্যায় একই ইউনিয়নের মতৈন গ্রামের হারিছ মিয়া বাড়ীর নিহত রাসেলের  খোঁজ খবর নিতে সরেজমিন পরিদর্শন কালে  শত শত নারী পুরুষের সমাগম ও কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।

নিহতের চাচা সাহাব উদ্দিন মোহনা টেলিভিশনকে জানান,গত বছরের এপ্রিল মাসে ধার দেনা ও কিস্তি নিয়ে রাসেল ইউছুপের সোফা ফ্যাক্টরীতে যায়। নিজের কোন ভূমি বা বসত ঘরও নেই। মা, স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে চাচা আবদুস ছাত্তারের বসত ঘরে কোন রকম বসবাস করছে। এর মধ্যে তার কন্যা সন্তানটি প্রতিবন্ধী।

সন্তানকে হারিয়ে নিহত রাসেলের মা শরীফা বেগম জ্ঞান হারিয়ে বার বার  মুচ্ছা যান। স্বামীকে  হারিয়ে স্ত্রী পান্না পাথর হয়ে দুচোখে অশ্রু ঝরছিল। পাশে তার স্বজনসহ অর্ধশতাধিক নারীর কান্নায় পুরো এলাকায় শোকের মাতম চলছে।

লাশ গুলোর অবশিষ্ট দেহাবশেষ নিয়ে আসতে সরকারের নিকট তিন পরিবার আকুতি জানিয়েছেন।

author avatar
Editor Online
Exit mobile version