Site icon Mohona TV

সহিংসতা নিয়ে আসিয়ানের ‘একতরফা’ বিবৃতির নিন্দা করেছে মিয়ানমারের জান্তা

মিয়ানমারে সহিংসতা ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন আসিয়ানের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারে সহিংসতা ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোটের (আসিয়ান) নেতারা। এ জন্য সরাসরি দেশটির শাসক জান্তাকে দায়ী করে জোটের নেতারা শান্তি ফেরাতে সহিংসতা বন্ধে জান্তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ায় আয়োজিত জোটটির শীর্ষ সম্মেলনে আসিয়ান নেতারা মিয়ানমার সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছেন। শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ ইন্দোনেশিয়া বলেছে, এ নিয়ে একটি সর্বসম্মত শান্তি পরিকল্পনায় সামান্য অগ্রগতি হয়েছে। ২০২১ সালে মিয়ানমারে একটি সামরিক অভ্যুত্থান হয়। নির্বাচিত সরকারপ্রধান অং সান সু চিকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এর প্রতিবাদে রক্তক্ষয়ী দমন অভিযান চালানোর পর থেকে মিয়ানমারে সহিংসতা বেড়ে যায়।

আসিয়ানসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক পক্ষও মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সমালোচনা করে আসছে। বহু বছর ধরে চলা মিয়ানমার সংকটের সমাধানে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে গতকালই ইন্দোনেশিয়ায় একত্র হয়েছেন আসিয়ান নেতারা। আসিয়ান নেতারা গতকাল এক বিবৃতিতে ১৯টি বিষয়ের প্রতি জোর দিয়েছেন। এর মধ্যে তাঁরা মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী এবং মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সহিংসতা কমাতে; বেসামরিক নাগরিক, বাড়িঘর ও স্কুল, হাসপাতাল, বাজারের মতো সরকারি স্থাপনার ওপর হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। নেতারা বলেছেন, ‘মিয়ানমারে অব্যাহত সহিংসতার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’

এদিকে অধিকার সংগঠনগুলোও বিদ্রোহী ঘাঁটি এবং বেসামরিক অবকাঠামোতে বিমান হামলার জন্য জান্তাকে অভিযুক্ত করেছে। এই সংকট সমাধানে আগে নেওয়া কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।  মিয়ানমারে শান্তি ফেরাতে আসিয়ানের পক্ষ থেকে যে পাঁচ দফা শান্তি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন এখনো আলোর মুখ দেখেনি। কেননা মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং জোটের শান্তি প্রস্তাব মেনে বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে অনাগ্রহ জানিয়েছেন।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো এই অঞ্চলে ‘শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য’ ঐক্য ও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তাঁর শীর্ষ কূটনীতিক বলেছেন, সহিংসতা বন্ধে জান্তার সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া আটকে আছে। ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘শেষ কথা হলো, পাঁচ দফা ঐকমত্য বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই।’

জোকো উইদোদো নিশ্চিত করে বলেছেন, ২০২৬ সালে মিয়ানমারের পরিবর্তে আসিয়ানের সভাপতিত্ব করবে ফিলিপাইন। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বলেছেন, ম্যানিলা আসিয়ানের সভাপতির পদ নিতে প্রস্তুত।

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তির বর্জনের কারণে ২০০৬ সালে আসিয়ানের সভাপতির পদ মিয়ানমার থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ওই বছর জোটটির সভাপতির পদ চলে যায় ফিলিপাইনের কাছে। এরপর ২০১৪ সালে ৫০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে মিয়ানমারের প্রথম বেসামরিক রাষ্ট্রপ্রধান থেইন সেইনের অধীনে এই জোটের সভাপতিত্ব করে দেশটি।

 

author avatar
Delowar Hossain Litu
Exit mobile version