অর্থনীতিজাতীয়

চীনাদের বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ একটি আদর্শ ও নিরাপদ জায়গা

মোহনা অনলাইন

চীনা বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ একটি আদর্শ ও নিরাপদ জায়গা বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকার অবকাঠামো, আইসিটি, সড়ক যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণে পরিবেশ তৈরি করে দিচ্ছে। বাংলাদেশের এই উদ্যোগ চীনা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে বলেও মনে করেন তারা।

গত শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রর্শনী কেন্দ্রে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিসিসিআই) আয়োজনে “চায়না-বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজেস হাই কোয়ালিটি ডেভেলপমেন্ট ফোরাম: অ্যাচিভমেন্টস এবং ওয়ে ফরওয়ার্ড” শির্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ-এর ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিআই) এবং চায়না এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের (সিইএবি) সহযোগিতায় বাংলাদেশে চীনের দূতাবাস এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। প্রদর্শনীতে চীনের ১৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে । এছাড়াও বাংলাদেশের বাজারে কাজ করছে এমন প্রায় ২০টি অন্যান্য বড় চীনা কোম্পানি এবং বেশ কয়েকটি বাংলাদেশি বড় কোম্পানি ও ব্যাংকও এতে অংশ নেয়। প্রদর্শনীতে এসব প্রতিষ্ঠানের ৬০টির বেশি স্টল রয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন (ইআরডি) বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম জাহাঙ্গীর বলেন, “চীন ও বাংলাদেশের এই সহযোগিতার সম্পর্ক অনেক দিন শুরু হয়েছে। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা চাইনিজ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। তখন আমারও সেখানে থাকার সুযোগ হয়েছিলো। সেই সময়ের বেশ কিছু নতুন চুক্তি হয়েছিলো। দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিতে গত কয়েক বছরে বেশ কিছু কাজ করা হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং টানেল নির্মাণে চায়নার বহু কোম্পানি জড়িত। একইভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণেও তারা জড়িত ছিলো। আমি অনেক চায়না প্রকল্পে ভিজিট করেছি। তারা সবক্ষেত্রেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকে।”

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ যথেষ্ট দৃশ্যমান। চীনের কোম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগ কম ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আগামী দিনে বাংলাদেশে আরও বেশি চীনা বিনিয়োগ আশা করছি।’ চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) এর সভাপতি এবং সিসিইসিসি বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান কে চ্যাংলিয়াং তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘বিশ্বের অবকাঠামো নির্মাণের নায়ক চীন। এমনকি বাংলাদেশেও চীনা কোম্পানিগুলো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্পে বেশ সক্রিয়। চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ৫৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মোট ১২টি সড়ক, ২১টি সেতু এবং ৫৪১.৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মোট সাতটি রেললাইন তৈরি করেছে। এছাড়াও, চীনা কোম্পানিগুলো কয়লা, সৌর এবং বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করেছে, যা বাংলাদেশের জ্বালানি খাতকে বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে।’

বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিআই) সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা বলেন, “বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে উচ্চমানের উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং সহযোগিতার একটি অসাধারণ যাত্রা রয়েছে। চীনা কোম্পানিগুলো আমাদের দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীন দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কাউন্সেলর সোং ইয়াং, বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মুহাম্মদ ফেরদৌস, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষের (পিপিপি) বিশেষজ্ঞ ড. এএম আল-আমিন, সিইএবির সভাপতি এবং এলডিসি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ঝুয়াং লাইফেং, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শাখার প্রতিনিধি, সিইএবি, হুয়াওয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সিটিও মা জিয়ান, সিইএবি-এর পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ডেপুটি কান্ট্রি বাংলাদেশে পাওয়ার চায়নার ম্যানেজার হান কুন, এস আলম গ্রুপের উপদেষ্টা এএসএম আলমগীর কবির এবং পাওয়ারভিশন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মজিবুর রহমান প্রমূখ।

author avatar
Mohona Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button