জীবনধারা

হার্ট ভালো রাখতে যা খাবেন, যা খাবেন না

মোহনা অনলাইন

হার্টের অসুখ বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের বিষয়। তবে আশার কথা হলো, অনেক কার্ডিওভাসকুলার রোগ উপযুক্ত জীবনযাপন এবং খাদ্যতালিকায় পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যেতে পারে। হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখার প্রাথমিক উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো হার্টের জন্য খাবার খাওয়া। সঠিক খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আপনার হার্ট ভালো রাখতে পারবেন।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার খান

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হলো অত্যাবশ্যক পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার নিয়মিত খেলে তা কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমে প্রদাহ কমাতে, হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করতে, রক্ত ​​জমাট বাঁধা কমাতে এবং রক্তচাপ কমাতে কাজ করে। ওমেগা-৩ এর ভালো উৎস রয়েছে এমন কিছু খাবার আইটেম হলো মাছ এবং বীজ যেমন তিসি, তুলসীর বীজ, চিয়া বীজ এবং আখরোট।

স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট খাওয়া কমান

স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট খাওয়া কমাতে হবে। এটি হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের চর্বি সাধারণত লাল মাংস, মাখন, পনির এবং অনেক প্রক্রিয়াজাত খাবারে পাওয়া যায়। এগুলো রক্ত ​​​​প্রবাহে এলডিএল (ক্ষতিকারক) কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে পারে। উচ্চতর এলডিএল কোলেস্টেরল ধমনী ফলক তৈরিতে অবদান রাখে। সেইসঙ্গে এথেরোস্ক্লেরোসিস, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য সর্বোত্তম। খাদ্যতালিকাগত ফাইবার, বিশেষ করে দ্রবণীয় ফাইবার, পাচনতন্ত্রে কোলেস্টেরলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এর নির্গমনকে সহজ করে। যার ফলে রক্তে এলডিএল (খারাপ) কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়। এই ক্রিয়াটি ধমনী ফলক তৈরি হওয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে এথেরোস্ক্লেরোসিস, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে।

সোডিয়াম গ্রহণের দিকে নজর রাখুন

হার্টের সর্বোত্তম স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য আপনার সোডিয়াম গ্রহণের দিকে নজর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যে অত্যধিক সোডিয়াম পানি ধরে রাখতে পারে, যার ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপ হার্ট এবং রক্তনালীগুলোতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। প্রক্রিয়াজাত খাবার, টিনজাত পণ্য এবং রেস্তোরাঁর খাবারে অতিরিক্ত সোডিয়াম থাকে। এক্ষেত্রে খাদ্যের পছন্দ সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে, খাবারের লেবেল পড়তে হবে এবং তাজা খাবার বেছে নিতে হবে। প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় সোডিয়ামের মাত্রা যেন অতিক্রম না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খান

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন। এটি হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র্যাডিকেলগুলোকে নিরপেক্ষ করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্ডিওভাসকুলার রোগের সূত্রপাত এবং অগ্রগতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আমলকি, জাম, বাদাম, আখরোট, পালং শাক, মেথি শাক এবং সরিষার শাকে এই উপাদান মিলবে।

শর্করাযুক্ত খাবার এবং পানীয় কমান

চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয় সীমিত করা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। অত্যধিক চিনি খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি, প্রদাহ এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে, যা কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত চিনি খেলে তা ইনসুলিন প্রতিরোধ এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হার্টের জটিলতা ইত্যাদির কারণ হতে পারে। চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয় ক্ষণিকের জন্য তৃপ্তিদায়ক তবে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব রয়েছে। এটি ধমনী শক্ত এবং সরু হয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। যা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।

হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখার সহজ ছয় সহজ উপায়

  • হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সপ্তাহে ন্যূনতম পাঁচ দিন করে রোজ ৩০ মিনিট ব্যায়ামের প্রয়োজন।
  • খাদ্যাভ্যাস পাল্টানো
  • ওজনকে বশ মানান
  • ধূমপান ছাড়ার চ্যালেঞ্জ জিতুন
  • ইতিবাচক মনোভাব ও চাপ কমান
author avatar
Delowar Hossain Litu
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button