Site icon Mohona TV

বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে দেশকে বাঁচাতে আরেকবার ‘নৌকা’য় ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’য় ভোট দিতে জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে দেশকে বাঁচাতে এবং দেশ সেবার জন্য আরেকবার সুযোগ দিতে তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’য় ভোট দিতে জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যেন আবারও জনগণের সেবা করতে পারে সেজন্য নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য আমি আপনাদের সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। বিএনপি-জামায়াত দেশকে ধ্বংস করবে এবং আমার দলই দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে পারবে।’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ অপরাহ্নে ভাঙ্গার নবনির্মিত ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে পদ্মা সেতুতে রেল চলাচলের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত মহাসমাবেশে দেয়া ভাষণে একথা বলেন। তিনি বলেন, “আমি আজ আপনাদের উপহার দিচ্ছি, পদ্মা সেতুর পর পদ্মা রেল সেতু।”

মাওয়ায় পদ্মা রেল সেতু উদ্বোধনের পর বিশেষ ট্রেনে পদ্মা নদী পার হয়ে মাওয়া থেকে ভাঙ্গায় পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, নৌকা আপনাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। নৌকা পদ্মা সেতু-রেল সেতু দিয়েছে, রাস্তা-ঘাটের উন্নতি করেছে, নৌকা আপনাদেরকে স্কুল- কলেজ-বিশ^বিদ্যালয় দিচ্ছে, নৌকাই এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। তাই, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার যাতে আপনাদের সেবা করতে পারে আপনাদের কাছে আমার সেই আবেদন থাকলো।

তিনি বিএনপি নেতৃত্ব খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের স্বরূপ উন্মোচন করে বলেন, লুটেরা বিএনপি যে এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেছে, দুর্নীতি করে সাজাপ্রাপ্ত আসামী, মুচলেকা দিয়ে, আর রাজনীতি করবে না বলে দেশে থেকে পালিয়েছে, অর্থ আত্মসাৎকারি, অস্ত্র চোরাকারবারি-এই হলো বিএনপির নেতা। আর জামাতে ইসলামি হলো যুদ্ধাপরাধী। যুদ্ধাপরাধের জন্য শাস্তি পেয়েছে। এরা দেশকে ধ্বংস করে দেবে। এই ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য একমাত্র নৌকা মার্কাই আপনাদের সবরকমের সহযোগিতা দেবে।

তাই, আপনাদের কাছে আমার এই আহ্বান। তাছাড়া, আমি জানি এবারে বৃষ্টি হচ্ছে, বন্যা হচ্ছে, নদী ভাঙ্গন-এসব আমাদের জন্য সমস্যা। তিনি বলেন, নদী ভাঙ্গন থেকে ফরিদপুর এবং শরিয়তপুরসহ বিভিন্ন এলাকাকে রক্ষা করার জন্য ইতোমধ্যে আমরা নদী ভাঙ্গনরোধে প্রকল্প গ্রহণ করেছি এবং তার কিছু কিছু বাস্তবায়নও শুরু করেছি। কাজেই, সারাদেশের মানুষের কল্যাণের জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

‘দেশের মানুষের সবধরনের উন্নয়নের জন্য তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে,’ উল্লেখ করে  প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের বিনাপয়সায় বই দিচ্ছি, বৃত্তি দিচ্ছি, প্রতি জেলায় স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণ করে দেয়া হচ্ছে। তাই, শিক্ষার্থী সকলকে মনেযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। তারা শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে উন্নত হয়ে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। আমরা আজকে বয়স্ক ভাতা, বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্ততা ভাতা দিচ্ছি, মাতৃত্বকালীন ভাতা দিচ্ছি, মাতৃদুগ্ধ প্রদানকারি কর্মজীবী মহিলাকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দিচ্ছি, তাদের জন্য বীর নিবাস করে দিচ্ছি, হিজড়া, বেদে, কুষ্ঠরোগী কেউ বাদ যাচ্ছে না। কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। পাশপাশি ভ’মিহীনদের বিনা পয়সায় ঘর করে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশে একটি মানুষও ভূমিহীন, গৃহহীন, ঠিকানা বিহীন থাকবে না। ইতোমধ্যে ৮ লাখ ৪০ হাজার পরিবারকে বিনাপয়সায় ঘর প্রদান করেছি। আর একটি মানুষও বাদ থাকলে তাকে আমরা করে দেব,” বলেন তিনি।
তাঁর সরকার উন্নয়নশীল দেশের কাতারে দেশকে এনেছে যেটি ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হবে, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এত দিনরাত পরিশ্রম করে এই দেশের এত যে উন্নতি করেছি-হাজার হাজার মাইল রাস্তা-ঘাট, গ্রামে গ্রামে কাঁচা রাস্তা খুব কমই আছে। যা আছে আগামীতে তাও করে দেব, রেল সম্প্রসারণ করছি, নৌপথ নদী ড্রেজিং করে চওড়া করছি, বিমান কিনে নতুন নতুন বিমান পথ চালু করেছি। বাংলাদেশকে সার্বিকভাবে উন্নয়ন করেছি। সারাবিশে^ আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। কারণ, বাংলাদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।

জনগণের প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীতে তার দলের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েও সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। অনেকে সেজন্য জীবনও উৎসর্গ করেছেন।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফের সঞ্চালনায় সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

author avatar
Delowar Hossain Litu
Exit mobile version