জীবনধারা

ঘুরে আসুন অপরূপ কাঞ্চনজঙ্ঘা

মোহনা অনলাইন

পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা থেকে বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার। কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ নেপাল ও ভারতের সিকিম সীমান্তে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার উচ্চতা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার । ভ্রমণপিপাসুরা প্রতিবছর নেপালে ছুতে যান হিমালয়ের এই পর্বতশৃঙ্গ দেখতে। বাংলাদেশের মাটি থেকেও দাঁড়িয়ে দেখা যায় ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’।

কখন দেখা যায়
সারা বছর কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় না। সাধারণত অক্টোবরের শুরু থেকে থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আকাশ মেঘহীন থাকলে দূরে বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা পাহাড়ের চূড়া দেখতে পাওয়া যায়। তাই কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে যেতে চাইলে আপনাকে উপরোক্ত সময়ের ভিতর যেতে হবে এবং ঐ সময় আকাশ পরিস্কার থাকলে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে।

কাঞ্চনজঙ্ঘা’য় কেন এতো আকর্ষণ
ভোরে সূর্যোদয়ের সময় মনে হয় যেন কাঞ্চনজঙ্ঘার সাদা বরফ সোনায় ছেয়ে গেছে। কারণ দিনের প্রথম সূর্যকিরণ বরফে এমনভাবে প্রতিফলিত হয় তা দেখতে যেন সোনার পাহাড়। বেলা বাড়লে আবার সেই রূপ বদলায়। দিনের মধ্যভাগে মনে হয় প্রকান্ড মেঘ উত্তরের আকাশটা দখল করে দাঁড়িয়ে আছে। বিকেলের ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ যেন লজ্জারাঙা। আর গোধূলিবেলায় পুরো কাঞ্চনজঙ্ঘা আবির খেলায় মেতে ওঠে।

কোথায় থেকে ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ ভালো উপভোগ করবেন
অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত হালকা শীতে পরিষ্কার আকাশে এই পর্বত চূড়া দেখা যায়। পঞ্চগড়ের বিভিন্ন পয়েন্টের মধ্যে তেঁতুলিয়া থেকেই বেশ ভালো দেখা যায়। জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, মহানন্দা নদীর তীর, বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট, শালবাহান রওশনপুর, কালিতলা ব্রীজ, ডাহুক সেতু, ভেরসা, চাওয়াই, করতোয়া সেতুসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে খালি চোখে দেখা মেলে। ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ উপভোগ করতে তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসন একটি ওয়াচ টাওয়ারও নির্মাণ করেছে।

কীভাবে যাবেন                                                                                                                                                        ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাস এ পঞ্চগড় যেতে পারবেন। বাসে সরাসরি তেঁতুলিয়া যেতে চাইলে হানিফ বাসে যাওয়া যাবে। ঢাকার শ্যামলী, গাবতলী বাস টার্মিনাল ও মিরপুর থেকে নাবিল পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইস, তানযিলা ট্রাভেল, বরকত ট্রাভেল এ পঞ্চগড় যেতে পারবেন।
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা বা দ্রুতযান এক্সপ্রেসে করে যেতে পারেন পঞ্চগড়।
এরপর পঞ্চগড় থেকে বাস, মাইক্রোবাস, কার বা যে কোনো যানবাহনেই পৌঁছাতে পারবেন তেঁতুলিয়া উপজেলায়।

কোথায় থাকবেন
পঞ্চগড় জেলা শহরে রয়েছে সার্কিট হাউস, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের গেস্টহাউস। বেসরকারিভাবে সেন্ট্রাল গেস্টহাউস, হোটেল মৌচাক, হোটেল প্রিতম, অগ্রদূত প্যালেস, এইচ কে প্যালেস, ধানসিঁড়িসহ বিভিন্ন আবাসিক হোটেল রয়েছে পঞ্চগড়ে।
তেঁতুলিয়ায় রয়েছে সরকারি ও বেসরকারি হোটেল ও বাংলো। মহানন্দা নদী ঘেঁষে উঁচু টিলার ওপর অবস্থিত শতবর্ষ পুরোনো তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো বা জেলা পরিষদ ডাকবাংলো। আগেভাগে যোগাযোগ করে এই ডাকবাংলোয় থাকার ব্যবস্থা করতে পারেন।
বেসরকারিভাবে হোটেল দোয়েল, স্কয়ার হোটেল, স্বপ্ন গেস্টহাউস, কাঠের বাড়ি গেস্টহাউস, হোটেল সীমান্তের পাড়, হোটেল কাঞ্চনজঙ্ঘা, কাজী ব্রাদার্স এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও পরিচালিত মহানন্দা কটেজসহ রয়েছে বিভিন্ন আবাসিক হোটেল।

কোথায় খাবেন
কাঞ্চনজঙ্ঘা ও জেলার পর্যটনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টের মধ্যে বাংলা, নুরজাহান, জান্নাত, ভাইভাইসহ অনেক হোটেল গড়ে উঠেছে।

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button