স্বাস্থ্য

বয়সভেদে দিনে কতটুকু ভাত খাওয়া উচিত আমাদের

মোহনা অনলাইন

বয়সভেদে দিনে কতটুকু ভাত খাওয়া উচিত আমাদের। সব দিক বিবেচনায় রেখে কোন বয়সে শর্করাজাতীয় খাবার কতটা গ্রহণ করা যাবে, সে বিষয়ে জানালেন ঢাকার গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান।

দুই বছর পেরিয়ে, পাঁচ বছর পর্যন্ত

সারা দিনে দেড়-দুই কাপ ভাত দেওয়া উচিত। একটা মাঝারি আলুর অর্ধেকটা দিন এই বয়সী শিশুকে।

৬-১০ বছর

এই বয়সীদের জন্য শর্করার উৎস হিসেবে দেড়-দুই কাপ ভাত, দুটি রুটি, আধা কাপ চিড়া (বা মুড়ি), একটি মাঝারি আলুর অর্ধেক এবং দু-তিনটি বিস্কুটই যথেষ্ট।
১১-১৬ বছর

এই বয়সে প্রয়োজন তিন-চার কাপ ভাত, তিনটি রুটি, এক কাপ চিড়া (বা মুড়ি), ১টি মাঝারি আকারের আলু। সারা দিনে এগুলোর সঙ্গে আরও খাওয়া যাবে চার-পাঁচটি বিস্কুট।

১৭-২০ বছর

এই বয়সে সারা দিনে প্রয়োজন তিন কাপ ভাত, দুটি রুটি, একটি মাঝারি আলু এবং দু-তিনটি বিস্কুট। তবে কায়িক পরিশ্রম বেশি হলে আরও আধা কাপ ভাত এবং একটি রুটি বাড়িয়ে নিন।

২১-২৫ বছর

আড়াই-তিন কাপ ভাত, দুটি রুটি আর মাঝারি আকারের অর্ধেকটা আলুই এই বয়সের সারা দিনের পুষ্টির জন্য যথেষ্ট।

২৬-৩০ বছর

২১-২৫ বছর এবং ২৬-৩০ বছর বয়সের জন্য শর্করার প্রয়োজন একই পরিমাণ। কিন্তু অতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রম হলে এই বয়সে আধা কাপ ভাত বাড়িয়ে দিন, একটি রুটিও বাড়িয়ে নিন, মাঝারি আকারের আলুও খেতে পারবেন পুরোটা।
৩১-৩৫ বছর

সারা দিনে আড়াই থেকে তিন কাপ ভাত এবং দুটি রুটি খেতে পারেন। আলু না খাওয়াই ভালো। নিতান্তই খেতে চাইলে মাঝারি আকারের আলুর অর্ধেকটা খেতে পারেন।

৩৬-৪২ বছর

সারা দিনে দুই কাপ ভাত আর দুটি রুটি খেতে পারবেন। আলু পারতপক্ষে খাবেনই না। মুড়ি, চিড়া, বিস্কুটও নয়।

৪২ পেরোনোর পর

রোজ ভাত খেতে পারবেন দেড় থেকে দুই কাপ, রুটি দু-তিনটি। আলু, মুড়ি, চিড়া, বিস্কুট খাবেন না।

খেয়াল রাখুন

এখানে যে পরিমাণ দেওয়া হয়েছে, তা সারা দিনের জন্য। অর্থাৎ, পুরো পরিমাণটাকে সারা দিনে ভাগে ভাগে গ্রহণ করতে হবে। একটি বা অর্ধেক আলু বলতে বোঝানো হয়েছে, সারা দিনে মোট এই পরিমাণ আলু খেতে পারবেন যেকোনোভাবে। ভাজি, তরকারি, সালাদ প্রভৃতি যে উপায়েই আলু খাওয়া হোক, তা যেন ওই পরিমাণ আলু দিয়েই করা হয়।
আরও যা জানা জরুরি

ফাস্ট ফুড না খাওয়াই ভালো। কোনো দিন কেক, পেস্ট্রি, নুডলস বা ফাস্ট ফুড খাওয়া হলে সেদিনের ভাত, রুটি, আলু, মুড়ি, চিড়া, বিস্কুটের পরিমাণ কমিয়ে ফেলতে হবে, যাতে সর্বমোট শর্করার পরিমাণ বেড়ে না যায়। কোনো বেলা হয়তো বাইরে বার্গার খেলেন, সেই বেলা কিন্তু আর ভাত, রুটি, আলু খাওয়া চলবেই না; খেতেই যদি হয়, তাহলে কেবল আমিষজাতীয় খাবার আর সবজি খেতে পারেন।

রুটির জন্য বেছে নিন লাল আটা। বিশেষত ৩৫ পেরোনোর পর (কিংবা যেকোনো বয়সে ডায়াবেটিস থাকলে) এই বিষয়টিতে অবশ্যই জোর দিন। ভাতের জন্য লাল চাল পাওয়া গেলে খুবই ভালো। সেটা না পেলেও যাঁদের ওজন বেশি কিংবা ডায়াবেটিস রয়েছে, তাঁরা মোটা চাল বেছে নিন, যা রান্না করার জন্য একটু বেশি সময় লাগে।

চিনি এবং মিষ্টি খাবারেও প্রচুর শর্করা রয়েছে। এগুলোও অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। ৩০ পেরোনোর পর সারা দিনে দু-আড়াই চা-চামচের বেশি চিনি খাবেন না। মিষ্টি খাবার বা চায়ে যে পরিমাণ চিনি আছে, সেটুকুও হিসাব করে মোট পরিমাণটা দু-আড়াই চা-চামচের মধ্যেই রাখতে হবে। চল্লিশ পেরোলে এই পরিমাণটা নামিয়ে আনুন এক চা-চামচের মধ্যে। ডায়াবেটিস থাকলে চিনি বাদ দিতে হবে।

বয়স চল্লিশ পেরোনোর পর থেকে মিষ্টি ফল খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে। আর যেকোনো বয়সে ডায়াবেটিস থাকলে অবশ্যই এগুলো কম খাবেন।

author avatar
Delowar Hossain Litu
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button