জীবনধারা

জেনে নিন পুদিনা পাতার বিস্ময়কর ১২টি উপকারিতা

মোহনা অনলাইন

হাঁপানি, পেটের সমস্যা সারাতে পুদিনা পাতা বিশেষ উপকারী। পুদিনা পাতায় ক্যালরি, প্রোটিন, চর্বি সবকিছুরই মাত্রা কম। ভিটামিন এ, সি আর বি – কমপ্লেক্স মেলে পুদিনা পাতা থেকে, যা ত্বকের যত্নে আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত জরুরি উপাদান। এছাড়াও এই পাতায় মেলে লৌহ, পটাসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ।

এখন বাজারে খুব সহজলভ্য পুদিনা পাতা। রান্নায় পুদিনা পাতার কদর তো আছেই, কিন্তু ঔষধি হিসেবে এই পাতার বহুল ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই। যা অনেকের অজানা। এছাড়া রূপচর্চার উপাদান হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে পুতিনা পাতা।পানীয় কিংবা সালাদে চমৎকার সুগন্ধ নিয়ে আসে পুদিনা। খাবারে সুগন্ধ যোগ করার পাশাপাশি পুষ্টিরও জোগান দেয় উপকারী এই ভেষজ। এছাড়া পুদিনার তেল মাথা ব্যথার মতো সমস্যা কমাতে কার্যকরী।

তাছাড়া ত্বকের যত্নেও নানাভাবে ব্যবহার করা যায় পুদিনা। জেনে নিন পুদিনার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে।

১. পুদিনায় এমন যৌগ রয়েছে যা প্রাণীদের জিআই ট্র্যাক্টের টিস্যুগুলোকে শিথিল করে। ফলে আপসেট স্টমাকের সমস্যা দূর হয়। পুদিনাতে থাকা ‘মিন্ট’ হজমে সহায়ক উৎসচেকগুলোর ক্ষরণ বাড়িয়ে তোলে। গলা, বুকে জ্বালা ভাব কমায়।

২. গবেষণায় দেখা গেছে যে; গ্যাস, পেটে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে পারে পুদিনা। পুদিনা পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, যা পেটের যে কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারে খুব দ্রুত। যাঁরা হজমের সমস্যা এবং পেটের ব্যথা কিংবা পেটের নানান সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাঁরা খাবার কাওয়ার পর ১ কাপ পুদিনা পাতার চা খাওয়ার অভ্যাস করুন। ৬/৭টি তাজা পুদিনা পাতা গরম জলে ফুটিয়ে মধু মিশিয়ে খুব সহজে পুদিনা পাতার চা তৈরি করতে পারেন ঘরের মধ্যেই।

৩. পুদিনা পাতা পেস্ট করে ত্বকে লাগালে ত্বক উজ্জ্বল ও সতেজ হয়। গোলাপ, পুদিনা, আমলা, বাঁধাকপি ও শশার নির্যাস একসঙ্গে মিশিয়ে টোনার তৈরি করে মুখে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। মসৃণও হয়। ব্রণ দূর করতে ও ত্বকের তেলতেলে ভাব কমাতে তাজা পুদিনা পাতা বেটে ত্বকে লাগান। দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণের দাগ দূর করতে প্রতিদিন রাতে পুদিনা পাতার রস লাগান। সম্ভব হলে সারারাত রাখুন। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে কমপক্ষে ২/৩ ঘণ্টা রাখুন।

৪. পুদিনায় রোম্যারিনিক অ্যাসিড নামে একটি যৌগ রয়েছে যা শরীরের হিস্টামিন প্রতিক্রিয়া কমাতে পারে। এতে হাঁচি এবং চুলকানির মতো অ্যালার্জির লক্ষণ কমে।

৫. পুদিনায় রোম্যারিনিক অ্যাসিড নামে একটি যৌগ রয়েছে যা শরীরের হিস্টামিন প্রতিক্রিয়া কমাতে পারে। এতে হাঁচি এবং চুলকানির মতো অ্যালার্জির লক্ষণ কমে। দিনা পাতায় রয়েছে ‘স্যালিসিলিক অ্যসিড’, যা র‌্যাশ, ব্রণর সমস্যা দূর করতে পারে। যদি মুখে বা গায়ে র‌্যাশ বেরোয়, তা হলে বাটা পুদিনা পাতায়, লবণ বা অন্যান্য মশলা মেশানোর আগেই খানিকটা তুলে ফ্রিজে রেখে দিন। ঠান্ডা হলে র‌্যাশ উপর মেখে নিন।

৬. আশ্চর্যজনক হলেও পুদিনা পাতার গুণ খুব সত্যি। বহু বিজ্ঞানীদের দাবি, পুদিনা পাতা ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে। পুদিনা পাতার পেরিলেল অ্যালকোহল যা ফাইটো নিউট্রিয়েন্টসের একটি উপাদান দেহে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে।

৭. রোদে পোড়া ত্বকের জ্বালা কমাতে পুদিনা পাতার রস ও অ্যালোভেরার রস এক সাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৮. আশ্চর্যজনক হলেও পুদিনা পাতার গুণ খুব সত্যি। বহু বিজ্ঞানীদের দাবি, পুদিনা পাতা ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে। পুদিনা পাতার পেরিলেল অ্যালকোহল যা ফাইটো নিউট্রিয়েন্টসের একটি উপাদান দেহে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে।

৯. সর্দি হলে নাক বুজে যাওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো মারাত্মক কষ্ট পান অনেকেই। সেই সময় যদি পুদিনা পাতার রস খান, তাহলে এই কষ্ট থেকে রেহাই পাবেন নিমেষে। যাঁরা অ্যাজমা এবং কাশির সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের তাৎক্ষণিক উপশমে পুদিনা পাতা বেশ কার্যকরী। খুব বেশি নিঃশ্বাসের এবং কাশির সমস্যায় পড়লে পুদিনা পাতা গরম জলে ফুটিয়ে সেই জলেরর ভাপ নিতে পারেন। ভাপ নিতে অসুবিধা হলে গার্গল করার অভ্যাস তৈরি করুন।

১০. প্রতি মাসে ঋতুস্রাব চলাকালীন শরীরে যে অতিরিক্ত ফোলাভাব দেখা যায়, তা অনেকটাই ফ্লুইড বা ‘ইডিমা’ জমার কারণে। এই ফোলাভাব দূর করতে পারে পুদিনা। ভাত, রুটি বা স্যুপের সঙ্গে এই পুদিনা পাতার চাটনি খেলে এই সমস্যা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া যায়।

১১.  চুলে উকুন হলে পুদিনার শেকড়ের রস লাগাতে পারেন। উকুনের মোক্ষম ওষুধ হল পুদিনার পাতা বা শেকড়ের রস। গোটা মাথায় চুলের গোড়ায় এই রস ভাল করে লাগান। এরপর একটি পাতলা কাপড় মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দু বার এটা করুন। এক মাসের মধ্য চুল হবে উকুনমুক্ত।

১২. পুদিনা পাতায় রয়েছে জানথাইন অক্সাইড। এই যৌগটি অন্ত্রের স্বাস্থ্যরক্ষায় সহায়তা করে। অন্ত্রের কার্যকারিতা ঠিক থাকলে, তার প্রভাব পড়ে বিপাক হারের উপরেও। ফলে বিপাকক্রিয়ার উপর নির্ভর করে, ডায়াবেটিসের মতো এমন বহু রোগ ঠেকিয়ে রাখতে পারে পুদিনা।

 

author avatar
Online Editor SEO
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button