আন্তর্জাতিক

গাজার বহু মানুষই হামাস বিরোধী: সমীক্ষা

মোহনা অনলাইন

ইজরায়েল-হামাস দু’পক্ষের সম্মতিতে আপাতত আগামিকাল পর্যন্ত যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। খেপে খেপে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বন্দিদের। সোমবার রাতে গাজা থেকে ১১ জন ইজরায়েলিকে হামাস মুক্তি দেয়। মঙ্গলবার ভোরে ইজরায়েলের জেলে বন্দি ৫৩ জন প্যালেস্টাইনিকে মুক্ত করে রামাল্লায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

বন্দিমুক্তির সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ভিডিয়ো ছড়িয়েছে। দেখা যাচ্ছে, অপহরণের ৫০ দিন পরে ইজরায়েলি পণবন্দিদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেডক্রসের হাতে তুলে দিচ্ছে হামাস। মুক্ত ইজরায়েলিদের মুখে হাসি। তারা হাত নেড়ে বিদায় জানাচ্ছে হামাস বাহিনীকে।

এই সব ভিডিয়োয় বেজায় চটেছে ইজরায়েল। সেনার তরফে পাল্টা ভিডিয়ো প্রকাশ করে দাবি করা হয়েছে, ওগুলি হামাসের প্রচারমূলক ভিডিয়ো। আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে বন্দিদের হাসতে ও হাত নাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) তাদের এক্স হ্যান্ডলে লিখেছে, ‘গল্পের একটা দিক দেখছেন। ভুলে যাবেন না, এরাই সেই সন্ত্রাসবাদী যারা আমাদের প্রিয়জনকে হত্যা করেছে। অপহরণ করেছে। অত্যাচার চালিয়েছে। ওদের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে হাসতে বাধ্য করা হয়েছে। হামাস আপনাদের বোকা বানাচ্ছে।’

যুদ্ধ বিরতির ফাঁকে আরও জ্বালানি ও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে গিয়েছে গাজায়। তবে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির মতে, ২৩ লক্ষ প্যালেস্টাইনির প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই সামান্য। এখনও পর্যন্ত ১৯ জন পণবন্দি-সহ মোট ৫০ জন ইজরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে হামাস। ইজ়রায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১৫০ প্যালেস্টাইনি।

অন্য দিকে, আজও রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রধান আন্তোনিয়ো গুতেরেস গাজায় হামলা বন্ধের আর্জি জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘প্যালেস্টাইনিদের যা ভোগ করতে হচ্ছে, ইতিহাসে তা অন্যতম অন্ধকার অধ্যায় হয়ে থাকবে। হামাসের কৃতকর্মের জন্য সমস্ত গাজার মানুষের এই দুর্ভোগ মেনে নেওয়া যায় না।’

এই প্রসঙ্গে উঠে এসেছে আমেরিকার একটি সংগঠনের করা সমীক্ষার কথা। আমেরিকান-প্যালেস্টাইনি ওই সমীক্ষক দলের দাবি, ৮ অক্টোবর হামাসের হামলার আগেই ৬৭% গাজার বাসিন্দা হামাস শাসনের বিরোধী বলে জানিয়েছিলেন। ২০০৬ সালে গাজ়ায় নির্বাচিত হামাস সরকার চূড়ান্ত স্বৈরাচারী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত বলে অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। সমীক্ষকদের দাবি, ইজরায়েলের উপরে হামাসর হানা সমর্থন করেনি অধিকাংশ গাজার মানুষ।

চলতি যুদ্ধবিরতির মাঝেই কাল ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের সঙ্গে দেখা করেছেন আমেরিকান ধনকুবের ইলন মাস্ক। তিনি বলেন, ‘‘নির্বিচারে হত্যালীলা চালিয়েছে হামাস জঙ্গিরা। ওদের মেরে ফেলা ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই।’’ একই সঙ্গে যুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মাস্ক। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষাব্যবস্থায় এমন পন্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে তারা হত্যাকারী হয়ে ওঠার প্রশিক্ষণ না পায়।

author avatar
Online Editor SEO
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button