জীবনধারা

বাড়তি ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা প্রভাব ফেলে কিডনির উপর, কী ভাবে সতর্ক হবেন?

মোহনা সংগৃহীত

নিয়মহীন জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি অত্যধিক ঝোঁকের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে বাড়ে। ইদানীং অল্পবয়সিরাও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন জীবনধারায় ব্যাপক অনিয়মের জন্যই। রক্তে উচ্চ মাত্রার ইউরিক অ্যাসিড জমার সমস্যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় ‘হাইপারইউরিসেমিয়া’।

এই রোগকে অবহেলার করার ফল হতে পারে মারাত্মক, এ বিষয় বার বার সতর্ক করেছেন চিকিৎসকেরা। কলকাতার ফোর্টিস হাসপাতাল ও কিডনি ইনস্টিটিউট চিকিৎসক এ আর দত্ত বলেন, ‘‘সমীক্ষা অনুসারে, ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা উভয় রোগে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ বা তারও বেশি লোকের হাইপারইউরিসেমিয়া রয়েছে। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে তার প্রভাব পড়তে পারে কিডনির উপরেও।

তাই উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভীষণ জরুরি। না হলে কিডনির অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। অ্যাবোট ইন্ডিয়া লিমিটেডের অ্যাসোসিয়েট মেডিকেল ডিরেক্টর চিকিৎসক কার্তিক পীথাম্বরন বলেন, ‘‘শরীরে ইউরিক অ্যাসিড মাত্রা বেড়ে গেলে সেই সমস্যাকে কখনওই অবহেলা করা উচিত নয়, এর পরিণতি ভাল নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর শরীরে তেমন উপসর্গ দেখা যায় না, তবে ইউরিক অ্যাসিড ধরা পড়লেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।’

‘হাইপারইউরিসেমিয়া’-র প্রধান লক্ষণ হাঁটুর অস্থিসন্ধিতে ব্যথা। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে, তা কিডনি, অস্থিসন্ধি এবং মূত্রনালিতে জমা হতে থাকে। দীর্ঘ দিন জমতে জমতে তা ‘ক্রিস্টাল’-এর আকার নেয়। ফলে অস্থিসন্ধির নমনীয়তা নষ্ট হয়। পায়ের আঙুলে, গোড়ালিতে, কখনও হাত এবং কব্জিতেও ব্যথা হতে পারে। এই রোগ থেকেই শরীরে বাসা বাঁধে বাতের সমস্যা।

‘হাইপারইউরিসেমিয়া’ ধরা পড়লে রোজের খাবার থেকে বাদ দিতে হবে চর্বি যুক্ত মাছ, পাঁঠার মাংস, অ্যালকোহলের মতো খাবার। সেই সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাও জরুরি।

কোন উপসর্গ দেখে সতর্ক হবেন?

১) শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে বার বার প্রস্রাব পাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। কারণ, কিডনি চায় শরীরে থাকা অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডকে বার করে দিতে। তবে প্রস্রাবের আধিক্য ছাড়াও শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে প্রস্রাবের সঙ্গে হতে পারে রক্তপাতও। এ ছাড়া, হতে পারে ইউটিআই বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন।

২) ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা বাড়লে প্রস্রাবের সময় অনেকেরই জ্বালা করে। এই জ্বালা অনেক সময় এতটাই বেশি হয় যে মানুষটি প্রস্রাব করতেও ভয় পান। এর থেকে কিডনিতে পাথরও হতে পারে। এ ছাড়া প্রস্রাবে দুর্গন্ধও হতে পারে এই রোগের কারণে। তাই আপনার সঙ্গেও এমনটা ঘটলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৩) শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে পিঠের নীচের দিকে, তলপেটে কিংবা কুঁচকিতে ব্যথা হতে পারে। তাই এমন উপসর্গ দেখলেও সতর্ক হোন।

author avatar
Online Editor SEO
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button