সংবাদ সারাদেশ

বরগুনায় প্রাইমারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ৪২ জন পরীক্ষার্থীর কোড নম্বর ভুল, রেজাল্ট অনিশ্চিত!

মোঃ সাগর আকন, বরগুনা:

কেন্দ্র শিক্ষকের ভুলের কারনে বরগুনায় ৪২ জন শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার্থীর রেজাল্ট অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অনেক পরীক্ষার্থী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে। কেন্দ্র শিক্ষক বলেন এটি অনিচ্ছাকৃত ভুল। কেন্দ্র প্রধান অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপালেন।

জানা যায়, শুক্রবার বরগুনা সদরে টাউন হল সড়কে অবস্থিত রেডক্রিসেন্ট বিদ্যানিকেতন স্কুলে ৮৪ জন প্রাথমিক সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়। ঘন্টা ব্যাপি পরীক্ষায় সকাল ১০ টায় শুরু হলে মাত্র ২ মিনিট আগে কেন্দ্র পরিদর্শক হাসি আকতার একটি কাগজে কোড নম্বর লিখে অপর কেন্দ্র পরিদর্শক প্রতাপ রায়ের নিকট দেয়। কোডটি হল পদ্মা-১৪৬৫, মেঘনা-৪৭৭৪, যমুনা-৩৬৭১ ও সুরমা-২৫৬৮। রেড ক্রিসেন্ট বিদ্যানিকেতন ৪ নম্বর কক্ষে দুই ভাগে ৭২১৭১১৬ হতে ৭২১৭২০০ মোট ৮৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করেন। তাদের মধ্য ৪২ জন পরীক্ষার্থীর কোড হল সুরমা-৩৬৭১ যমুনা হলো ২৫৬৮। কেন্দ্র পরিদর্শক হাসি আকতার ভুল করে প্রতাপ রায়কে কোড নম্বর দেয়  সুরমা ২৫৬৮ এবং যমুনা ৩৬৭১ প্রতাপ রায় ওই কোড নম্বর স্কুলের  ব্লাক বোর্ডে লিখে দেয়। পরীক্ষার্থীরা ব্লাক বোর্ডের লেখা দেখে উত্তরপত্র ভরাট করে।
প্রকৃত পক্ষে যমুনার কোড হবে ২৫৬৮ এবং সুরমার কোড হবে ৩৬৭১। পরিদর্শক প্রতাপ রায় ওই  ৪২ জন পরীক্ষার্থীর স্বাক্ষর নেয় সুরমার সেটে যমুনার পরীক্ষার্থী এবং যমুনার সেটে সুরমার সেটে। পরীক্ষার্থী মো: সবুজ মিয়া। রোল নম্বর ৭২১৭১৭১ কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা ৪ নম্বর কক্ষে ৪২ জন পরীক্ষা দিয়েছি। ওই ৪২ জন পরীক্ষার্থীর কোড যমুনা। কোড নম্বর ছিল ২৫৬৮। হাসি আকতার ম্যাডাম ভুল করে আমাদের সুরমার কোড দিয়েছে। সুরমার কোড নম্বর ছিল ৩৬৭১। আমরা যমুনার ওএমআর সীট ভরাট করি। প্রকৃত পক্ষ হবে যমুনার কোড। আমরা পরীক্ষা শেষে অন্য পরীক্ষার্থীর সঙ্গে সেট মিলাতে গিয়ে দেখি হাসি আকতার ভুল করে প্রতাপ রায়কে কোড নম্বর লিখে দেয়। প্রতাপ রায় ব্লাক বোর্ডে আমাদের যে কোড লিখে দেয়। আমরাও তাই লিখি। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা দ্রুত হাসি ম্যাডামের কাছে গিয়ে জানাই কোড নম্বর ভুল দিয়েছেন। এতে হাসি ম্যাডাম আমাদের উপর রেগে যায়। পরে কেন্দ্র প্রধান রেড ক্রিসেন্ট বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক আবদুল হাকিম স্যারের নিকট যাই। তিনিও আমাদের কথায় কোন গুরুত্ব দেয়নি। আমি দ্রুত ব্লাক বোর্ডের ছবি তুলে গণমাধ্যম কর্মিদের দেই। একই সঙ্গে বুয়েটের কোড নম্বর সংগ্রহ করি। মো: সবুজ মিয়া বলেন, আমার সরকারী চাকরীর বয়স নেই। আমরা চাই পরীক্ষা স্থগিত হয়ে আবার সঠিক কোডে পরীক্ষা হোক। পরীক্ষার্থী মো: সাইফুল ইসলাম রোল নম্বর ৭২১৭১৫৯ তিনি বলে ৭৫ নম্বরের পরীক্ষা দিয়েছি। ৭০ টি সঠিক উত্তর হয়েছে। এখন আমার রেজাল্টই আসবে না। আমি কেন্দ্র পরিদর্শকদের শাস্তি জানাই।

৪ নম্বর কক্ষের অপর কেন্দ্র পরিদর্শক প্রতাপ রায় বলেন, হাসি আকতার নিজ হাতে একটি কাগজে কোড নম্বর লিখে আমাকে দিয়েছেন। তার লেখা দেখে আমি ব্লাক বোর্ডে কোড নম্বর লিখে দেই।  ডকুমেন্টস আমার কাছে রয়েছে। তিনি বলেন, হাসি আকতার ভুল করেছেন। আমি কোন ভুল করিনি। হাসি আকতার দায় স্বীকার করে বলেন, এটি আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল। এ বিষয় উর্ধতন কর্তৃপক্ষ আপনাদের সাথে কথা বলবেন। ওই

কেন্দ্র প্রধান আবদুল হাকিম বলেন, আমার বাসায় অনেক পরীক্ষার্থী এসেছেন। আমি তাদের বলেছি, এটি হাসি আকতার ভুল করেছেন। তাছাড়া আমি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। পরে কথা বলব। বরগুনা  জেলা

প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আবদুল মুকিত মোল্লা বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোন তথ্য জানা নেই। তিনি বলেন, সব দায়িত্ব কেন্দ্র প্রধানের। আমরা বার বার কেন্দ্র প্রধানকে সতর্ক করে দিয়েছি। কোড নম্বর কে দেয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরীক্ষার খাতা দেখে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। কেন্দ্র প্রধানের নাম ফোন নম্বর আগেই আমরা তাদের নিকট পাঠিয়ে দেই। পরীক্ষার দুই তিন মিনিট আগে বুয়েট থেকে কোড নম্বর কেন্দ্র প্রধানের ফোনে আসে। এ ব্যাপারে এখন করনীয় কিছু নেই।

উল্লেখ্য,বরগুনা জেলায় সহকারী শিক্ষক ২৫০ জন শূন্য পদে আবেদন করেছে ১২ হাজার ৩১৮ জন। শুক্রবার পরীক্ষা দিয়েছে ৯ হাজার ১৮০ জন। অনুপস্থিত থাকে ৩ হাজার ১৩৮ জন।

author avatar
Online Editor SEO
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button