বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

‘অচল’ স্মার্টফোনও শুনে নিচ্ছে আপনার সব কথা!

মোহনা অনলাইন

কম খরচের মধ্যে ঘর সাজানোর জিনিস কোথায় পাওয়া যাবে ভাবছেন? নতুন কিছু কেনাকাটার কথা ভাবছেন? কিন্তু আপনি যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করলেন, পর মুহূর্তেই স্মার্টফোন খোলার পর সেগুলির বিজ্ঞাপন দেখতে পাচ্ছেন। এ কী করে সম্ভব? তা হলে কি আপনার ‘অচল’ ফোন আপনার উপরেই সব সময় নজরদারি চালাচ্ছে? কী বলছে গবেষণা?

সম্প্রতি কক্স মিডিয়া গ্রুপের তরফে গবেষণা করে একটি সমীক্ষা করা হয়েছে। তার ফলাফলের ভিত্তিতে সেই সংস্থা জানিয়েছে যে স্মার্টফোন আদতে যে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে আড়ি পাতে, সে সম্ভাবনা একেবারে নাকচ করা যায় না। সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, স্মার্টফোনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে আখেরে লাভ হচ্ছে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলির। বিজ্ঞাপন সংস্থার সঙ্গে জড়িয়ে থাকার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে সমাজমাধ্যমগুলিরও। কিন্তু প্রকাশ্যে কোনও সমাজমাধ্যমের তরফে এই দাবি মানা হয়নি।

শুধুমাত্র স্মার্টফোন নয়, স্মার্টটিভি থেকে শুরু করে যাবতীয় গ্যাজেটের মাধ্যমেই নাকি মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের উপর নজরদারি করা হচ্ছে বলে সমীক্ষায় জানা গিয়েছে। স্মার্টফোন, স্মার্টটিভি-সহ অন্যান্য যে যন্ত্রগুলিতে ‘বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন’ রয়েছে সে সমস্ত যন্ত্রের মাধ্যমেই নাকি নজরদারি চালানো হচ্ছে। ফোনে কোনও কথোপকথন না হলেও তা ‘বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন’-এর মাধ্যমে নজরদারি করার প্রক্রিয়ার নাম ‘অ্যাক্টিভ লিসেনিং’।

‘অ্যাক্টিভ লিসেনিং’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের কণ্ঠস্বরকে তথ্য হিসাবে গ্রহণ করে মাইক্রোফোন। তার পর সেই তথ্য সংগ্রহ করে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি মূল গ্রাহকদের লক্ষ্য করে ‘টার্গেটেড অ্যাডভার্টাইজ়িং’-এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করে। সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলির জন্য ‘অ্যাক্টিভ লিসেনিং’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা দিনের কোনও না কোনও সময় কোনও পণ্য নিয়ে আলোচনা করেন তার অর্থ তাঁদের সেই পণ্যটি কেনার সম্ভাবনা রয়েছে। সংস্থার কাছে তাঁরাই মূল ক্রেতা। তাই বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি অনলাইন মাধ্যমে সেই নির্দিষ্ট ক্রেতাদের লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপন দেখায়।

সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলির জন্য ‘অ্যাক্টিভ লিসেনিং’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা দিনের কোনও না কোনও সময় কোনও পণ্য নিয়ে আলোচনা করেন তার অর্থ তাঁদের সেই পণ্যটি কেনার সম্ভাবনা রয়েছে। সংস্থার কাছে তাঁরাই মূল ক্রেতা। তাই বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি অনলাইন মাধ্যমে সেই নির্দিষ্ট ক্রেতাদের লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপন দেখায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা ‘এআই’-এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি অনলাইন মাধ্যমে ‘টার্গেটেড অ্যাডভার্টাইজ়িং’ প্রক্রিয়াটি চালায়।

এআই-এর মাধ্যমে মানুষের ‘ভয়েস ডেটা’ সংগ্রহ করার পর আর কী কী পদ্ধতিতে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলি কাজ করে তা এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ রূপে জানা যায়নি। সমীক্ষার রিপোর্টেই বলা হয়েছে, বহু তথ্যই গোপন রাখতে চায় বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলি। তবে স্মার্টফোনের নজরদারির হাত থেকে বাঁচার উপায়ও রয়েছে। অধিকাংশ আইফোনে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে যে ছবি বা কথা রেকর্ড করা হলে তা আইফোন ব্যবহারকারীদের জানিয়ে দেওয়া হয়। এই ব্যবস্থা রয়েছে কয়েকটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনেও।

সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, সাধারণত ফোনে কথা না বলা বা ক্যামেরায় ছবি না তোলা সত্ত্বেও যদি স্মার্টফোনে ‘বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন’ অথবা ক্যামেরা ব্যবহৃত হয় তবে স্মার্টফোনের স্ক্রিনের কোণের দিকে সবুজ রঙের একটি চিহ্ন ‘নোটিফিকেশন’ হিসাবে দেখা যায়। সবুজ রঙের চিহ্ন দেখে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা সতর্ক হয়ে যান। তবে ‘অ্যাক্টিভ লিসেনিং’-এর প্রক্রিয়াটি বেআইনি কি না, সেই প্রশ্নেরও উত্তর মিলেছে রিপোর্টে।

দাবি করা হয়েছে, স্মার্টফোনের নজরদারি চালানোর প্রক্রিয়াটি কোনও ভাবেই বেআইনি নয়। বরং স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের অনুমতি নিয়েই তাঁদের ব্যক্তিগত কথোপকথনে কান পাতা হয়। স্মার্টফোনে সফ্‌টঅয়্যার আপডেট করার সময় অথবা কোনও অ্যাপ্লিকেশন ফোনে ডাউনলোড করার সময় প্রথমেই কিছু শর্ত এবং নিয়মাবলির তালিকা দেখানো হয়। সেই তালিকায় উল্লেখ করা থাকে যে, প্রয়োজনে ‘বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন’ এবং ক্যামেরা ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা মাইক্রোফোন এবং ক্যামেরা ব্যবহারের শর্তে রাজি হলে তবেই সফ্‌টঅয়্যার আপডেট অথবা অ্যাপ ডাউনলোড করা শুরু হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিনা অনুমতিতে ‘অ্যাক্টিভ লিসেনিং’ প্রক্রিয়া শুরু করা যায় না।

author avatar
Online Editor SEO
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button