জীবনধারা

কিডনির ক্ষতি করে যেসব খাবার

মোহনা অনলাইন

কিডনি মানবদেহের যোদ্ধা। এগুলি শরীর থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলি আমাদের রক্তে জল, লবণ এবং খনিজের একটি স্বাসকর ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে, যা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। অস্বাস্থ্যকর খাবার, অনুপযুক্ত জীবনধারা আপনার কিডনির স্বাস্থ্য এবং কার্যকারিতাককে ব্যাহত করতে পারে।

এখানে কিছু খাবারের কথা বলা রয়েছে যা কিডনি ভালো রাখতে গেলে আপনার খাওয়া বন্ধ করা উচিত:

প্রসেসড ফুড: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, প্রোসেসড ফুড যেমন হিমায়িত খাবার এবং মাইক্রোওয়েভে রান্না করা খাবার টাইপ ২ ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় অনেকটাই। অতিরিক্ত চর্বি, চিনি বা সোডিয়ামে ভরা এসব খাবার আপনার কিডনির ক্ষতি করার জন্য যথেষ্ট। প্রসেসড ফুড এড়িয়ে তাই তাজা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। দোকানের খাবারের বদলে বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে হবে।

ফ্রোজেন খাবার: গবেষণায় দেখা গেছে, প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন ফ্রোজেন খাবার এবং মাইক্রোওয়েভযোগ্য ডিনার টাইপ 2 ডায়াবেটিসের বিকাশে অবদান রাখতে পারে। ভারী প্রক্রিয়াকরণ মানে আপনার খাবারে লুকানো চর্বি, চিনি বা সোডিয়ামে পূর্ণ হতে পারে। তাজা এবং সম্পূর্ণ খাবার প্রস্তুত করা এবং হিমায়িত খাবারগুলি এড়িয়ে চলতে হবে। আলুতে পটাসিয়ামও বেশি থাকে, যা আপনি যদি ইতিমধ্যে কিডনি রোগে ভুগছেন তবে তা কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

মেয়োনিজ: ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়োনিজ ব্যবহার করা হয়। সালাদ, স্যান্ডুইচ, বার্গারে ব্যবহার করা হয় এটি। এটি কিডনির জন্য মোটেও ভালো কিছু নয়। এক টেবিল চামচ মেয়োনিজে থাকে ১০৩ ক্যালোরি। এ ধরনের খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে সবচেয়ে বেশি। যদি খেতেই হয় তবে ফ্যাট ছাড়া এবং কম ক্যালোরির মেয়োনিজ খান। এতে সোডিয়াম ও চিনির পরিমাণ যেন অতিরিক্ত না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

আলুর ডিপ ফ্রাই: আলুর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা আলুর চিপস খেতে দারুণ লাগে নিশ্চয়ই? কিন্তু মজাদার এই খাবার আপনার কিডনির বারোটা বাজানোর জন্য যথেষ্ট। এ ধরনের খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা আজই বাদ দিন। কিডনি ও  ভালো রাখতে ডুবো তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। আলুতে পটাশিয়াম থাকে অনেক বেশি যা কিডনির জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

কোমল পানীয়: কোমল পানীয়তে চিনির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। সেইসঙ্গে এতে থাকে না কোনো পুষ্টিগুণও। এটি খাবারের অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ করে, যে কারণে বেড়ে যায় ওজন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কোমল পানীয় পান করলে তা অস্টিওপোরোসিস (হাড় দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া), কিডনি রোগ, মেটাবলিক সিনড্রোম এবং দাঁতের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

চিনি: চিনি বেশি খেলে শুধু সুগার বাড়ে না সেই সঙ্গে কিডনির সমস্যাও আসে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে প্রস্রাবের মাধ্যমে চিনি বেরিয়ে যায়। রক্তে শর্করার পরিমাণ যত বেশি হয় কিডনি দিয়ে ততই বেশি চিনি পরিস্রুত হয়। এর কারণেই ডায়াবেটিসের রোগীদের কিডনির সমস্যা হয়। আমাদের বেশিরভাগ খাবারেই চিনি পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক কিংবা প্রক্রিয়াজাত সব কিছুতেই চিনি রয়েছে। তাই চিনি গ্রহণে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। ফল প্রাকৃতিক চিনির উৎস, যা আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় অনেক ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে। এটি যোগ করা শর্করাযুক্ত খাবার, যা পুষ্টির মান স্কেলে কম থাকে। আপনি জানলে অবাক হবেন যে মসলা, রুটি এবং অন্যান্য স্ন্যাক খাবারেও অতিরিক্ত চিনি থাকে।
লবণ: বেশি পরিমাণ সোডিয়াম কিডনির জন্য ক্ষতিকর। লবণে প্রচুর সোডিয়াম থাকে। এ কারণে বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। দীর্ঘদিন ধরে লবণ খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হয়, এতে কিডনি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সাধারণত ডায়েটে প্রতিদিন প্রায় ৩৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে বলে অনুমান করা হয়েছে, যা স্বাস্থ্যকর প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক সর্বাধিক ২৩০০ মিলিগ্রাম (প্রায় এক চা চামচ লবণ) থেকে অনেক বেশি। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, ৭৫ শতাংশ সোডিয়াম আমেরিকানরা গ্রহণ করেন প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং রেস্টুরেন্টের খাবারে। অন্যান্য সাধারণ উচ্চ সোডিয়াম আসে টিনজাত স্যুপ, প্রক্রিয়াজাত মাংস, হিমায়িত পিৎজা, স্ন্যাক খাবার (যেমন: চিপস, ক্র্যাকার, প্রিটজেল), কেচাপ, বারবিকিউ সস, সয়া সসের মতো মসলা, সালাদ ড্রেসিং, আচার, জলপাই, বীট, টিনজাত শাকসবজি ইত্যাদি খাবার থেকে।
author avatar
Online Editor SEO
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button