জাতীয়

মেট্রোরেলের ঋণ শোধ হতে কতদিন লাগবে?

অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর যানজট কমাতে এবং যাত্রী চলাচল দ্রুত করার জন্য এক দশকের বেশি সময় আগে যে মেট্রোরেল নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, সেই পথে এখন উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশ নির্মাণের মাধ্যমে মেট্রোরেল প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। গত জানুয়ারি পর্যন্ত কমলাপুর অংশের কাজ এগিয়েছে ২৬ শতাংশ।

জাপানি ঋণের এই প্রকল্প পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর একই রকমের প্রকল্পের তুলনায় বেশি খরচে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শুধু টিকিটের আয়ে প্রকল্পটির বিনিয়োগ উঠে আসতে সময় লাগবে ৪৫ বছর।

২০১২ সালে উত্তরা থেকে মিরপুর এবং ফার্মগেট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়। এটি মেট্রোরেল লাইন-৬ নামে পরিচিত। প্রথম পর্যায়ে ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করা হয়। গত ৪ নভেম্বর চালু হয় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ। শুরুতে মতিঝিল পর্যন্ত এই মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও পরে তা কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়।

সম্প্রসারণসহ দুই দফায় সংশোধন করে এই প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। ১২ বছরের প্রকল্পটি ১৩ বছরে শেষ করা হচ্ছে। মেট্রোরেলের প্রধান আয়ের উৎস টিকিট বিক্রি। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, টিকিট বিক্রির টাকায় বিনিয়োগ উঠে আসতেই ৪৫ বছরের মতো সময় লাগবে।

মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য পাঁচটি আলাদা চুক্তির মাধ্যমে জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার কাছ থেকে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। গত বছরের মে মাসে মাশুল, সুদ, আসলসহ প্রথম কিস্তির ৫৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। গত ডিসেম্বর মাসে দ্বিতীয় কিস্তির সুদ-আসল বাবদ ১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর দুটি কিস্তিতে এভাবেই আগামী ৩০ বছর ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ঋণচুক্তির গ্রেস পিরিয়ড (ঋণ নেওয়া ও পরিশোধ শুরুর মাঝখানের বিরতি) শেষ হবে আরও তিন বছর পরে। প্রথম ঋণচুক্তির কিস্তির মতো তখনো বছরে দুটি কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ শুরু হবে। এভাবে ২০৩১-৩২ অর্থবছর থেকে পঞ্চম ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হবে। ওই বছর পাঁচটি ঋণচুক্তির জন্য একসঙ্গে প্রায় ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিস্তির পরিমাণও বাড়বে বলে জানা গেছে। ২০৬১-৬২ অর্থবছরে মেট্রোরেলের সব ঋণ পরিশোধ হবে।

ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, পুরোদমে চালু হলে মেট্রোরেলে দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী চলাচল করবেন। তখন মাসে ৭২০-৭৩০ কোটি টাকা আয় হবে। সেই হিসাবে দাম না বাড়ালে শুধু টিকিট বিক্রির আয় দিয়ে মেট্রোরেল নির্মাণের খরচ উঠে আসতে কমপক্ষে ৪৫ বছর লাগবে। মেট্রোরেল যখন পুরোদমে চলবে, তখন প্রতিবছর গড়ে এক হাজার কোটি টাকার মতো পরিচালন ব্যয় হবে। এই খরচের প্রায় ৭৫ শতাংশ আসবে টিকিট বিক্রি থেকে। বাকিটা পাওয়া যাবে স্টেশন প্লাজার দোকান ভাড়া, বিজ্ঞাপন ও অন্যান্য খাত থেকে।

author avatar
Mohona Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button