Site icon Mohona TV

অনাগত শিশুর লিঙ্গ-পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না: হাইকোর্ট

ছবি: সংগৃহীত

মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। কোনো হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাবরেটরি বা কোনো মাধ্যম অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করতে পারবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তীর্থ সলিল রায়। এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত শুনানি শেষে গর্ভের শিশুর লিঙ্গ-পরিচয় শনাক্ত রোধ প্রশ্নে রুলের ওপর রায়ের জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছিলেন হাইকোর্ট।
এর আগে, ২৯ জানুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় অনাগত শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করা যাবে না মর্মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। এই নীতিমালা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা ল্যাবরেটরি কোনো লেখা বা চিহ্ন বা অন্য কোনো উপায়ে শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করতে পারবে না। পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ নীতিমালা দাখিল করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বিষয়ে আজ রায় দেন হাইকোর্ট।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশরোধে নীতিমালা তৈরি করতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা বা নির্দেশনা তৈরি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় নির্ধারণে নীতিমালা তৈরি করতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চান হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেছিলেন। হাইকোর্টের রুলের পর নীতিমালা তৈরির জন্য কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

রুল জারির পর রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেছিলেন, ভারতে আইন করে গর্ভজাত সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গর্ভের শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করা হলে প্রসূতি মায়ের মানসিক চাপ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক চাপে গর্ভপাত করার ঘটনাও ঘটে। ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি গর্ভের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশে পরীক্ষা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট করেন এই আইনজীবী।

ইশরাত হাসান জানান, গর্ভের সন্তানের পরিচয় প্রকাশ না করার বিষয়টি একেবারে কোনো প্রকার আপত্তি ছাড়াই মেনে নিয়েছে সরকার। এটি জানার অধিকার কারো নেই। কারণ এতে মা মানসিক চাপের শিকার হতে পারেন। এতে মা ও অনাগত সন্তান উভয়েরই ক্ষতি হতে পারে। এটা বাস্তবায়ন হলে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে যেমন গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে তা ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে জানতে পারে না, তেমনি এ বিষয়টি জানানো বন্ধ হয়ে যাবে যে মাতৃগর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে। যার ফলে আমরা একটা সুস্থ সন্তান পাব। অনেক সময় দেখি গর্ভের সন্তান কন্যা থাকলে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হন মায়েরা, সেগুলো থেকে মা ও শিশু রক্ষা পাবে। এছাড়া কন্যা সন্তান হলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অ্যাবরশনের ঝুঁকি থাকে, সেগুলো থেকে মায়েরা নিস্তার পাবেন।

author avatar
Online Editor SEO
Exit mobile version