আন্তর্জাতিকজাতীয়

ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে মুসলিম দেশগুলো একটি অভিন্ন মুদ্রা চালু করতে পারে : প্রধানমন্ত্রী

মোহনা অনলাইন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, মুসলিম দেশগুলো তাদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মতো একটি অভিন্ন মুদ্রা চালু করতে পারে। তিনি বলেন, “আমরা মুসলিম দেশগুলো যদি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধার্থে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো একটি অভিন্ন মুদ্রা চালু করতে পারি, তাহলে খুব ভালো হবে।” প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তুরস্কের বাণিজ্য উপমন্ত্রী মোস্তফা তুজকু-এর নেতৃত্বে ডি-৮ বাণিজ্যমন্ত্রীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের আটটি সর্বাধিক জনবহুল মুসলিম দেশকে নিয়ে ডি-৮ গঠন করা হয়েছে, যার লক্ষ্য তাদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি এই দেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বন্ধুত্বের উন্নতি ঘটানো। আমার লক্ষ্য হলো সাধারণ মানুষের ভাগ্য ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করা এবং এটা তখনই সম্ভব, যখন আমরা আমাদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে পারব। ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর জন্য প্রচুর সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের মধ্যে বাণিজ্য উন্নত করতে পারি, তবে অন্যের উপর নির্ভরশীল হতে হবে না।’
শেখ হাসিনা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের নিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বলেন, তাদের এক বা দুই প্রজন্ম হারিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের অনেকেই অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। তিনি তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তাঁর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘মিয়ানমারের বর্তমান অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে এটি দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডি-৮-এর উচিত ব্যবসা-বাণিজ্যে পরিবারের মতো একসঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য একে অপরকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া। বৈঠকের মূল এজেন্ডা ছিল ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) বাস্তবায়ন এবং এর কার্যকারিতার ক্ষেত্রগুলো প্রসারিত করা। ডি-৮ দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদারে সম্মত হওয়ায় ঢাকা ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়।
প্রতিনিধি দলটি ২৭ বছর আগে ডি-৮ প্রতিষ্ঠার অন্যতম সূচনাকারী হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং বর্তমানে শেখ হাসিনাই একমাত্র ডি-৮ প্রতিষ্ঠাকালীন সরকার প্রধান, যিনি বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিনিধি দলটি বলেছে, বৈঠকে তারা ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে বানিজ্যিক লেন-দেনের পরিমান ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা এখন ১৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তারা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও খাওয়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে বলেন, ডি-৮ এবং মুসলিম দেশগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ডি-৮ মন্ত্রী গাজার পক্ষে শেখ হাসিনার অবস্থানের প্রশংসা করেন।
এ সময় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া ও সিনিয়র বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ উপস্থিত ছিলেন।

 

author avatar
Mohona Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button