জীবনধারা

ইফতারে কেন খেজুর খাবেন?

মোহনা অনলাইন

আজ প্রথম রোজা। রমজানে আমাদের ইফতারের অন্যতম একটি বড় অনুষঙ্গ খেজুর। খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙা রমজানের ঐতিহ্য। খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা সুন্নত। তা ছাড়া প্রতিদিনের ইফতারের সঙ্গে খেজুর খাওয়া যেমন একদিকে সুন্নত, অপরদিকে দৈনন্দিন জীবনের খাদ্য ঘাটতির চাহিদা পরিপূরক।

যুগ যুগ ধরে দেশে দেশে রমজানের ইফতারে খেজুর খাওয়ার রীতি। কেন সবাই খেজুর খায় উপোস ভাঙার সময়? এর পিছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণ। যা হয়ত সবাই জানেন না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সারা দিন উপবাসের পরে এমন কিছু খাওয়া উচিত যা শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়। আর খেজুরকে বলা হয় প্রাকৃতিক শক্তির উৎস। খেজুরের রয়েছে আরও অনেক পুষ্টি গুণ। খেজুর আয়রন, ক্যালসিয়াম, সালফার, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ফলিক এসিড, প্রোটিন ও ভিটামিনে ভরপুর।

সুস্বাদু আর বেশ পরিচিত একটি ফল। যা ফ্রুকটোজ এবং গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। এটা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়।খেজুর ফলকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। খেজুরের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বলা হয় চারটি বা ৩০ গ্রাম পরিমাণ খেজুরে আছে ৯০ ক্যালোরি, এক গ্রাম প্রোটিন, ১৩ মি.লি. গ্রাম ক্যালসিয়াম, ২.৮ গ্রাম ফাইবার এবং আরও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। আছে প্রচুর ভিটামিন বি। যা ভিটামিন বিসিক্স মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

আসুন জেনে নেয় ইফতারে কেন খেজুর খাবেন-

১. রোজায় শরীরে ফাইবারের প্রয়োজন পড়ে। খেজুর শরীরের এই পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণ করে। এছাড়াও সারাদিন না খেয়ে কাজকর্ম করে শরীর ক্লান্ত হয়ে ওঠে। এজন্য শরীর সচল রাখতে খেজুরে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বেশ কার্যকর। যে কারণে খেজুর খাওয়ার মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে শরীরে এনার্জি বেড়ে যায়। সারা দিন উপোস করে শরীরে ক্লান্তি আসে, তা দূর করে এনার্জি জোগাতে সাহায্য করে খেজুর।

২. খেজুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া হৃৎপিণ্ডের সবচেয়ে নিরাপদ ওষুধ খেজুর।

৩. পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ও প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ খেজুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। তাই যারা নিয়মিত খেজুর খান, তাদের বেলায় ক্যান্সারের ঝুঁকিটাও অনেক কম থাকে। খেজুরে থাকা উচ্চমাত্রার ভিটামিন বি নার্ভকে শান্ত করে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা খেজুর খেতে পারেন। এই ফল রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যেও পরিমিত পরিমাণে এই ফল উপকারি।

৪. উপোস করলে সাধারণত অ্যাসিডিটি হয়। যার থেকে অস্বস্তি হতে থাকে। খেজুর শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা বশে রেখে অস্বস্তি কমায়। খেজুর হজম করতে সাহায্য করে। সারাদিন না খেয়ে থেকে ইফতারে আমরা নানা রকম খাবার খেয়ে থাকি। হরেক রকম তেলে ভাজা, ফল, পানীয়তে জমে যায় ইফতার। এসব খাবার হজমে সাহায্য করে থাকে খেজুর।

৫. সারা দিন না খেয়ে থাকলে খাওয়ার সময় বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা তৈরি হয়। তাই খেজুর খেয়ে উপোস ভাঙলে এর মধ্যে থাকা জটিল কার্বোহাইড্রেট হজম হতে বেশি সময় নেয়। ফাইবার থাকার কারণে পেট ভরা লাগে। তাই বেশি খাওয়ার আগেই পেট ভরে যায়। উপোস করার ফলে শরীরে যে খারাপ কোলেস্টেরল জমা হয় তা ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে খেজুর।

author avatar
Online Editor SEO
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button