জীবনধারা

সীসা দূষণের কারণে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হবার ঝুঁকি বাড়ছে- হেলথ জার্নাল

মোহনা অনলাইন

সীসা দূষণের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন চতুর্থ। এর ফলে একদিকে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে অস্বাভাবিক হারে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তেমনি শিশুদেরও আইকিউ কমে যাচ্ছে।

আর্থিক ক্ষতির হিসেবে এর পরিমাণ প্রায় ২৮ হাজার ৬৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা দেশের ২০১৯ সালের মোট জিডিপি’র প্রায় ৬ থেকে ৯ শতাংশের সমান।

বাংলাদেশে প্রতিবছর সীসা দূষণের ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষ অকালে মারা যাচ্ছে। একই কারণে শিশুদের আইকিউ কমে যাচ্ছে, যার ফলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হবার ঝুঁকি বাড়ছে।

চিকিৎসা সাময়িকী ‘দ্যা ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নালে’ প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

‘গ্লোবাল হেলথ বার্ডেন অ্যান্ড কস্ট অব লেড এক্সপোজার ইন চিলড্রেন অ্যান্ড অ্যাডাল্টস : অ্যা হেলথ ইমপ্যাক্ট অ্যান্ড ইকোনমিক মডেলিং অ্যানালাইসিস’ নামের এ গবেষণাটি করেছেন বিশ্বব্যাংকের একদল গবেষক।

সীসা সবচেয়ে বড় ক্ষতি করে শিশুদের। মাত্রার চেয়ে বেশি সীসা শিশুদের শরীরের বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে। ২০১৯ সালের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন যে, সীসা দূষণের ফলে দেশটিতে শূন্য থেকে চার বছর বয়সী বাচ্চারা প্রায় দুই কোটি আইকিউ পয়েন্টস হারাচ্ছে। এতে তাদের বুদ্ধির যথাযথ বিকাশ হচ্ছে না। ফলে নতুন কিছু শেখার ক্ষেত্রে তাদের যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি খাবারে অরুচি, ওজন কমে যাওয়া, খিটখিটে মেজাজসহ আচার-ব্যবহারে দেখা যাচ্ছে নানা অসংগতি।

এ প্রসঙ্গে ইউনিসেফ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. প্রিসিলা ওবিল বলেন, বাংলাদেশে শিশুদের রক্তে উচ্চমাত্রায় সীসার উপস্থিতি তাদের মেধার পূর্ণ বিকাশের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রকল্প সমন্বয়ক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, সীসা দূষণ রোধে এখনই উপযুক্ত সময়। এ সমস্যাকে সমূলে উৎপাটনের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

যেভাবে সীসার দূষণ ঘটে, ব্যাটারি ভাঙ্গা শিল্প, সীসাযুক্ত পেইন্ট, অ্যালুমিনিয়ামের হাড়ি-পাতিল, খাবার রাখার জন্য ব্যবহৃত সিরামিকের পাত্র, ই-বর্জ্য, খেলানা, সার, রান্নায় ব্যবহৃত বিভিন্ন মশলা, প্রসাধনী, খাবার-দাবার এবং চাষ করা মাছের জন্য তৈরি খাবার থেকেই মূলত: বাংলাদেশে সীসার দূষণ ঘটে। এছাড়া খাবার রাখার জন্য ব্যবহৃত ৫৯% ধাতব পাত্রে, ৪৪% সিরামিক পাত্রে, ৯% প্লাস্টিকের পাত্রে, ৫৪% পেইন্টে, ১৭% চাল/স্টার্চে, ১৩% খেলনায়, ৭% মশলায় এবং ৬% প্রসাধনীতে অতিমাত্রায় ক্ষতিকর সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

author avatar
Mohona Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button