মসলা বাটার শিল দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে শশুর-শাশুড়িকে ফোনে জানালেন স্বামী! 

আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুরের চন্নাপাড়া গ্রামের একটি বাড়ির কক্ষ থেকে তাসলিমা আক্তার (২৮) নামের এক পোশাক কারখানা কর্মীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার(১২ এপ্রিল) সকাল ৮ টার দিকে মরদেহ উদ্ধার হয়। স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামী পালিয়ে গেছে বলে পুলিশের ধারণা। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩ টায় হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলেও ধারণা করছেন তারা।

স্বজন ও পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাসলিমা আক্তার নেত্রকোনা সদর উপজেলার পাতলি গ্ৰামের ইসলাম উদ্দিনের মেয়ে ও কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার বড়বাড়ি গ্ৰামের গফুর মিয়ার ছেলে মোঃ আল আমিনের স্ত্রী। তিনি (তাসলিমা) শ্রীপুরের কেওয়া গ্রামের ব্লু প্ল্যানেট ফ্যাশন ওয়ার লিমিটেড নামের একটি কারখানায় কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর পদে চাকরি করতেন। উপজেলার চন্নাপাড়া গ্রামের মোছাঃ রাবেয়া বেগমের বাড়িতে তিন মাস ধরে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকছিলেন তিনি। স্বামী আল আমিন সাবেক সেনা সদস্য। তিনি প্রায়ই ভাড়া বাড়িতে তাসলিমার কাছে আসতেন।

তাসলিমা আক্তারের চাচাতো ভাই মোঃ লাদেন মিয়া বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে আল আমিন তার শশুর ও শাশুড়িকে ফোন দিয়ে স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ জানান। একই সময় বাড়ির মালিকের ছেলে রিমনকে ফোন দিয়ে তাদের থাকার ঘরে যেতে বলেন। পরে বাড়ির মালিক থাকার ঘরের সামনে গিয়ে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ দেখতে পান। দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে বিছানায় তাসলিমার রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর স্বজনদের খবর দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে আল আমিন ও তাসলিমার মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। সে ঝগড়া মিটিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের চার বছর বয়সী সন্তান আছে। স্বামী শ্রীপুরের অন্য একটি কারখানায় চাকরি করেন।

মোঃ লাদেন আরো বলেন, তিনি খবর পেয়ে সকাল আটটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে বিছানায় পড়ে থাকা তাসলিমার রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। মুখের উপর বালিশ ও কাঁথা দিয়ে চাপা দেওয়া ছিল। মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন তিনি।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিম মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে জানিয়েছেন, ধারণা করা হচ্ছে স্বামী আল আমিন পারিবারিক মনোমালিন্যতার কারনে তার স্ত্রী তাসলিমাকে মসলা বাটার শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে পালিয়া গেছেন । উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে  পরিদর্শন করেছেন। উল্লেখিত বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button