শ্রীপুরে পানি নিষ্কাশন বন্ধ, কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় ২ গ্ৰামের ফসলি জমি!
আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর(গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার অপরিকল্পিত ভাবে কারখানার দেওয়াল নির্মাণে বন্ধ হয়েছে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে দুই গ্ৰামের কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দুই গ্রামের বাসিন্দারা।
উপজেলার নেহালিয়া ও সিটপাড়া গ্রামের ২৬ ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, ওই দুটি গ্রামের বেশিরভাগ লোক কৃষিজীবী। কিন্তু গত প্রায় দুই বছর ধরে তারা কৃত্রিম জলাবদ্ধতায় পড়ে কৃষি ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না। নেহালিয়া গ্রামে মেঘনা গ্রুপ নিচু জমি কিনে একটি কারখানা নির্মাণ করে। জায়গাটি ভরাট করার পর বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করার সময় পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা রাখেনি সংশ্লিষ্টরা। এতে সামান্য বৃষ্টিতেই ওই গ্রামের ফসলি জমিগুলোতে পানি জমে যায়। ফলে এসব জমিতে ফসল উৎপাদন করা যাচ্ছে না।
অভিযোগে বলা হয়, জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য দুই বছর ধরে ওই কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন গ্রামবাসী। কিন্তু তারা এ সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেননি। ফলে বাধ্য হয়ে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শরণাপন্ন হয়েছেন।
নেহালিয়া গ্রামের কৃষক হিজবুল বাহার বলেন, এই দুটি গ্রামের সব ধরনের পানি একসময় গ্রামের অদূরে একটি খালে নিষ্কাশন হতো। নিচু জমিতে বাউন্ডারি ওয়াল দেওয়ার ফলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুটি গ্রামের প্রচুর ফসলি জমি অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। বছরখানেক ধরে একাধিকবার কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তারা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এ ধরনের উদ্যোগ নেননি। এতে গ্রামের প্রায় সব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত।
সিটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, গত দুই বছর ধরে গ্রামের জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। জমিতে ধান রোপন করার পর অল্প একটু বৃষ্টি হলেই তা পানির নিচে ডুবে যায়। এই সমস্যার সমাধানে বাউন্ডারি ওয়ালের নিচে দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা উচিত ছিল। বারবার বলার পরেও কারখানা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়নি।
পানি কোথায় যাবে তা নিজেরও জানার দরকার জানিয়ে মেঘনা গ্রুপের জমি রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বে থাকা গোলাপ হোসেন বলেন, আমাদের কারখানার জমির মধ্যেও পানি রয়েছে। তা কোনো জমি দিয়ে যাবে তা সেটা নিয়েও আমরা চিন্তিত।
মেঘনা গ্রুপের নির্মাণাধীন কারখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ফারুক আহমেদ বুধবার দুপুরে বলেন, ‘ কারখানা নির্মাণ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ খুব বেশি না। সমস্যার সমাধানে বিষয়টি কারখানা কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মোঃ তরিকুল ইসলাম মোহনা টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, গ্রামবাসীর অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে সমস্যা সমাধানে কাজ করবো।