গরু চুরির সন্ধেহে হত্যা, ২ বছর পর আসামী গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পিবিআই
বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় উজ্জ্বল হোসেন নামে একজনের লাশ উদ্ধারের দুই বছর পর ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারকৃতরা আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন। গরুচোর সন্দেহে উজ্জ্বলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বগুড়ার পিবিআই’র এসপি মো. আকরামুল হোসেন। এর আগে, বুধবার ভোররাতে নিজ বাড়ি থেকে ঐ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে ঐদিন তাদের আদালতে পাঠালে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
গ্রেফতার দুজন হলেন- নন্দীগ্রামের শেখের মারিয়া গ্রামের ২৮ বছরের আলী হাসান ও একই গ্রামের ৪০ বছরের সাইদুল ইসলাম সাহাদ।
নিহত ৩৮ বছর বয়সী উজ্জ্বল নন্দীগ্রাম উপজেলার ভরতেতুলিয়া রায়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত লোকমান কাজী।
পিবিআই জানায়, ২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সকালে শেখের মারিয়া গ্রাম থেকে উজ্জ্বলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার দুই পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত রক্তাক্ত থেঁতলানো ও বুক-কাঁধে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঐদিনই এ ঘটনায় নন্দীগ্রাম থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের মা জহুরা বেওয়া। প্রথমে মামলাটি থানা পুলিশ তদন্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। পরবর্তীতে বাদী নারাজী জানালে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্ত শুরু করে পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল মালেক।
বুধবার উজ্জ্বল হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে আলী হাসান ও সাইদুল ইসলাম সাহাদকে আটক করেন তদন্ত কর্মকর্তা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ দুজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরবর্তীতে তাদের গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। আদালতে তারা হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তারা জানান গরু চোর সন্দেহে উজ্জ্বলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। উজ্জ্বলকে রাতে হত্যা করে ওই স্থানে লাশ ফেলে রাখেন তারা। পরে সকালে তার লাশ উদ্ধার হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পিবিআই জানায়, নিহত উজ্জ্বল কৃষিশ্রমিক ছিলেন। কিন্তু মাঝে মধ্যে ছোটখাটো চুরি করতেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে।
গ্রেফতার দুজনের জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসপি আকরামুল হোসেন জানান, রাতে উজ্জ্বল শেখ মারিয়া গ্রামের ঘুরাফেরা করছিলেন। ওই সময় তাকে ধাওয়া করে ধরে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃতরা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। একই সঙ্গে তারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের নামও প্রকাশ করেছেন। পলাতকদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। খুব শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।