খেলাধুলা

দারুণ কামব্যাকে বায়ার্নকে রুখে দিলো আর্সেনাল

মোহনা অনলাইন

সার্জ ন্যাব্রি শৈশবে বেছে নিয়েছিলেন লন্ডনের ক্লাবটিকেই। নিজের ক্যারিয়ারের শুরুটাও এখানে। তবে পরবর্তীতে চলে গিয়েছেন জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখে। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ন্যাব্রি ফিরলেন এই আর্সেনালেই। 

শুরুতেই এগিয়ে গেল আর্সেনাল। তাদের রক্ষণের মারাত্মক ভুলে দ্রুত্ই সমতা ফেরাল বায়ার্ন মিউনিখ। পেনাল্টি থেকে ‘প্রিয় প্রতিপক্ষের’ জালে বল পাঠিয়ে জার্মান চ্যাম্পিয়নদের এগিয়ে নিলেন হ্যারি কেইন। ম্যাচজুড়ে বল দখল ও আক্রমণে আধিপত্য করা মিকেল আর্তেতার দল দ্বিতীয়ার্ধে ফের পেল জালের দেখা। তাতে ড্র হলো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুই দলের জমজমাট লড়াই।

এমিরেটস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে শেষ আটের রোমাঞ্চকর ম্যাচটি শেষ হয়েছে ২-২ সমতায়। আগামী ১৭ এপ্রিল বায়ার্নের মাঠে হবে ফিরতি লেগ। সেই ম্যাচের জয়ী দল যাবে সেমি-ফাইনালে।

বুকায়ো সাকা স্বাগতিকদের এগিয়ে নেওয়ার পর বায়ার্নকে সমতায় ফেরান সের্গে জিনাব্রি। এরপর কেইনের ওই গোল। দ্বিতীয়ার্ধে দলকে সমতায় ফেরান লেয়ান্দ্রো ট্রোসার্ড। ঘরের মাঠে দ্বাদশ মিনিটেই এগিয়ে যায় আর্সেনাল। বেন হোয়াইটের দারুণ পাসে ঠাণ্ডা মাথার নিখুঁত বাঁকানো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন সাকা। ঝাঁপিয়েও নাগালে পাননি বায়ার্ন গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ার। দূরের পোস্ট ঘেঁষে বল জড়ায় জালে

চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটি সাকার চতুর্থ গোল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে অষ্টাদশ। চার মিনিট পর দ্বিগুণ হতে পারত ব্যবধান। নয়ারকে একা পেয়েও তার বরাবর শট নিয়ে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন হোয়াইট। অনেকটা খেলার ধারার বিপরীতে অষ্টাদশ মিনিটে সমতা ফেরায় বায়ার্ন। জিনাব্রির এই গোলে দায় আছে আর্সেনালের রক্ষণের, বিশেষ করে গাব্রিয়েল মাগালিয়াইসের।

মাঝমাঠে বল পেয়ে নিজেদের ডি-বক্সের অনেকটা এগিয়ে মাঝমাঠেই ফেরত পাঠান ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার। তার বাজে পাস ছিল সতীর্থের নাগালের বাইরে। বল পেয়ে যান লেরয় সানে। তার পাস পেয়ে লেয়ন গোরেটস্কা খুঁজে নেন জিনাব্রিকে। ছুটে গিয়ে দারুণ স্লাইডে জাল খুঁজে নেন তিনি।

গোল এড়ানোর অনেক সুযোগই ছিল আর্সেনাল ডিফেন্ডারদের সামনে। কিন্তু যথেষ্ট তৎপরতা দেখাতে পারেননি কেউই। আর্সেনালের রক্ষণেরই আরেকটা ভুলে ৩২তম মিনিটে এগিয়ে যায় বায়ার্ন। সফল স্পট কিকে এমিরেটস স্টেডিয়ামে ক্লাব ফুটবলে নিজের ষষ্ঠ গোলটি করেন কেইন। আর্সেনালের বিপক্ষে যা তার পঞ্চদশ গোল। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বায়ার্নের হয়ে এটি কেইনের ৩৯তম গোল।

তিন মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল সানের সামনে। কিন্তু হোয়াইট দুর্দান্ত স্লাইডে ব্যর্থ করে দেন তাকে। বায়ার্নের হাতছাড়া হয় নিশ্চিত একটি সুযোগ।

প্রথমার্ধে নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করায় একটু এগিয়ে ছিল বায়ার্ন। তবে বল দখলে অনেক এগিয়ে ছিল আর্সেনাল। ৬১ শতাংশ সময় বল নিয়ন্ত্রণে রেখে গোলের জন্য তারা শট নিয়েছিল ৯টি, যার তিনটি ছিল লক্ষ্যে। এর বিপরীতে বায়ার্নের নেওয়া দুটি শটই জড়ায় জালে।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা চলে অনেকটা একই তালে। বল দখলে এগিয়ে আর্সেনাল। পাল্টা আক্রমণে স্বাগতিকদের রক্ষণকে ব্যস্ত রাখে বায়ার্ন। তবে কোনো দলই পারছিল না খুব একটা পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে।

এই অর্ধে প্রথম কোনো শট লক্ষ্যে থাকে ৭৬তম মিনিটে। সেটিই পৌঁছায় জালে, ম্যাচে ফেরে সমতা। ডি-বক্সের ভেতরে জটলা থেকে গাব্রিয়েল জেসসু খুঁজে নেন অরক্ষিত ট্রোসার্ডকে। পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে বুলেট গতির শটে ডানদিকের পোস্ট ঘেঁষে জাল খুঁজে নেন তিনি। এই দুই জন ৬৭তম মিনিটে এক সঙ্গে বদলি হিসেবে নেমেছিলেন মাঠে।

অন্তিম সময়ে নায়ক হতে পারতেন কিংসলে কোমান। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা ফরাসি ফরোয়ার্ডের শট ৯০তম মিনিটে ব্যর্থ হয় পোস্টে লেগে। হাফ ছেড়ে বাঁচে আর্সেনাল।

পাঁচ মিনিটের যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে একটি পেনাল্টির জোরাল আবেদন তোলে স্বাগতিকরা, সাড়া দেননি রেফারি। উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচ শেষ হয় সমতায়।

author avatar
Online Editor SEO
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button