আন্তর্জাতিকস্বাস্থ্য

ক্যান্সারের ১০ লক্ষণ দেখে সতর্ক হোন

মোহনা অনলাইন

ক্যান্সারের নাম শুনলেই বেশির ভাগ মানুষ যেটি মনে করেন তা হচ্ছে, এটি একটি মারাত্মক রোগ, যাতে আক্রান্তরা মারা যান। বর্তমানে ক্যান্সারে আক্রান্তদের বেঁচে থাকার হার তিন গুণ বেড়েছে। আর এর সবই সম্ভব হয়েছে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করানোর কারণে। 

বাস্তবে, বেশির ভাগ ক্যান্সারই চিকিৎসাযোগ্য এবং যেসব রোগী খুব মারাত্মক পর্যায়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আগে চিকিৎসা করানোর সুযোগ পান, তারা একটি ভালো ফলও পান। সমস্যা হচ্ছে, অনেক সময় আমরা ছোটখাটো উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে চাই না বা সেগুলোকে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দিই না। এসব উপসর্গকে আমরা এড়িয়ে চলি যা আসলে প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

১. ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হলো, শ্বাসকষ্ট। কিন্তু হাঁপানি এবং শ্বাসকষ্টের মধ্যে পার্থক্য আছে। খুব বেশি দিন ধরে শ্বাসকষ্ট হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

২. ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের সবচেয়ে সাধারণ একটি উপসর্গ হচ্ছে জ্বর। অবশ্য যে স্থানে ক্যান্সার উৎপন্ন হয়েছে, সেখান থেকে দেহের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়া শুরু হলে তখন প্রায়ই জ্বর দেখা দেয়। ক্যান্সারে আক্রান্ত সবাই কোনো না কোনো সময় জ্বরে ভোগেন। বিশেষ করে যদি ক্যান্সার বা এর চিকিৎসা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলে, তাহলে জ্বর বেশি হয়। অনেক ক্ষেত্রে জ্বর ক্যান্সারের প্রাথমিক উপসর্গও হতে পারে। যেমন লিউকোমিয়া বা লিম্ফোমা।

৩. খাবার গিলতে অসুবিধা হয়? এটা কিন্তু ফুসফুসে ক্যান্সারের প্রথম ধাপ হতে পারে। অবহেলা না করে ডাক্তার দেখান।

৪. শরীরের কোথাও আচমকা গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া লিম্ফেটিক সিস্টেম পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। এটা ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণ হলেও হতে পারে।

৫. পেটে ব্যথা লেগেই রয়েছে– এমন হলে ভাববেন না যে ‘সিস্ট’ হয়েছে। এই ব্যথা কিন্তু যে কোনো ধরনের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

৬. কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া বা আপনার মলের আকারে দীর্ঘদিন ধরে পরিবর্তন মলাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। অন্যদিকে প্রস্রাব করার সময় ব্যথা, প্রস্রাবে রক্তপাত, বা মূত্রাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন যেমন আগের তুলনায় কম বা বেশি প্রস্রাব করা ইত্যাদি মূত্রাশয় বা প্রোস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। রেক্টাম দিয়ে নিয়মিত রক্তপাত হলে সাবধান হোন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটা কোলন ক্যান্সারের খুব সাধারণ লক্ষণ।

৭. ডায়েটিং বা শরীরচর্চা ছাড়াই অস্বাভাবিক হারে শরীরের ওজন কমে যাওয়াও কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। কারণ, এই রোগে খেতে ইচ্ছা করে না। ফলে ওজন কমতে থাকে।

৮. কোনো আঘাত পাননি অথচ শরীরে কালশিটে দাগ দেখা গেলে সেটা লিউকোমিয়া হতে পারে। মুখে, ঘাড়ে বা বুকে লাল রঙের দাগ হওয়াটাও ভালো লক্ষণ নয়। দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যান। ত্বকের ক্যান্সার ছাড়াও আরও কিছু ক্যান্সার রয়েছে যাতে আক্রান্ত হলে ত্বকে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।

৯. অনেক ক্যান্সার ত্বকের মাধ্যমে শনাক্ত করা যেতে পারে। এ ধরনের ক্যান্সার সাধারণত স্তন, অণ্ডকোষ, গ্রন্থি এবং শরীরের নরম টিস্যুতে হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে দেহে শক্তভাব বা মাংস জমে আছে– এ ধরনের অনুভূতি হয়। এটা এসব ক্যান্সারের প্রাথমিক বা বিলম্বিত উপসর্গ হতে পারে।

১০. কাশি ও ব্রঙ্কাইটিস– এ দুটিই দীর্ঘদিন না সারলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখান। এ দুটিই ফুসফুসের ক্যান্সার ও লিউকোমিয়ার লক্ষণ হতে পারে। সাধারণ ব্রঙ্কাইটিস হলেও তো প্রচণ্ড কাশি ও বুকে ব্যথা হয়। ব্রঙ্কাইটিসের কাশি চিকিৎসার পরও ফিরে এলে, বা পুরোপুরি না সারলে, আর একটু দেখি বলে অবহেলা করবেন না। টানা কাশি ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

author avatar
Delowar Hossain Litu
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button