জাতীয়

নাশকতাকারীদের ধরে দিলেই ২০ হাজার টাকা পুরস্কার

মোহনা অনলাইন

বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধের মধ্যে যারা নাশকতা করছে বা বাসে আগুন দিচ্ছে তাদের ধরিয়ে দিলে বা তথ্য দিলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

সোমবার (৬ নভেম্বর) পেট্রোল পাম্প মালিকদের সাথে নিরাপত্তা নিয়ে এক বৈঠকের পর ঢাকার পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের সামনে এই পুরস্কারের ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, “বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসীরা গাড়িতে আগুন দিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে, সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করছে। যারা আগুন দিয়ে দেশে আরাজকতা সৃষ্টি করে, হত্যা করে, তাদের ধরিয়ে দিলে বা তথ্য দিলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।”

যারা তথ্য দেবেন, তাদের পরিচয় গোপন রাখা হবে বলে জানান উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন।

জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘সরকার পতনের’ এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। সেদিন নয়াপল্টনে সমাবেশ শুরুর পর কাকরাইল মোড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে শান্তিনগর, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং দৈনিক বাংলা মোড় পরিণত হয় রণক্ষেত্রে।

সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেওয়া হয়, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করা হয় আরো ডজনখানেক যানবাহন। হামলা করা হয় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে। এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘাতে প্রাণ যায় যুবদলের এক নেতার।

সংঘর্ষের মধ্যে পণ্ড হওয়া সমাবেশ থেকেই পরদিন সারাদেশে হরতালের ডাক দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৯ অক্টোবর সেই হরতালের সকালে গুলশানের বাসা থেকে ফখরুলকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

এর প্রতিবাদে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই কর্মসূচি শেষে রবি ও সোমবার নতুন করে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ডাকে দলটি।

২৮ অক্টোবরের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও যানবাহন পোড়ানো হচ্ছে। এই সময়ে প্রাণ গেছে অন্তত ৯ জনের।

সার্বিক পরিস্থিতিতে মানুষের মনে ফিরে আসছে ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের টানা অবরোধ-হরতালের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতার স্মৃতি।

সে সময় নজিরবিহীন নাশকতা ও সহিংসতা দেখেছিল বাংলাদেশ, যানবাহনে ছোড়া পেট্রোল বোমায় মৃত্যু হয়েছিল শতাধিক মানুষের, বেঁচে যাওয়া অসংখ্য মানুষ এখনও সেই পোড়া ক্ষত বহন করছেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপি তাদের ‘পুরনো চেহারায়’ ফিরে গেছে। বিএনপি অবশ্য সহিংসতার জন্য উল্টো ক্ষমতাসীনদেরই দায়ী করছে।

২০১৫ সালের মত এবারও কয়েকটি ঘটনায় যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে পেট্রোল বোমা ছুড়ে। সে কারণে পেট্রোল পাম্প মালিকরা যেন খুচরা পেট্রোল বিক্রি না করেন এবং সতর্কতার সাথে পেট্রোল ও ডিজেল বিক্রি করেন, সেই পরামর্শ দেন পুলিশ কমিশনার।

সেই সঙ্গে তিনি পাম্পের নিরাপত্তার বিষয়ে নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য মালিকদের অনুরোধ করেন।

author avatar
Delowar Hossain Litu
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button