প্রকৃতিতে প্রতিদিনই বাড়ছে তাপমাত্রা। কাঠফাটা রোদ আর ভ্যাপসা গরমে নাভিশ্বাস চারদিক। ফলে অফিস ও বাড়িতে বেড়েই চলেছে এসির ব্যবহার। দীর্ঘক্ষণ এসিতে থাকা শরীরের জন্য মোটেও ভালো নয়। এর অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।
রাজধানী বেশিরভাগ শপিং মল থেকে শুরু করে অফিস-আদালত ও বাসা-বাড়িতেও এখন স্থান করে নিয়েছে এসি। কিন্তু গরম থেকে রক্ষা পেতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এসি ব্যবহারের শারীরিক ক্ষতিও রয়েছে, যা সম্পর্কে অবগত নন বেশিরভাগ মানুষই। চিকিৎসকরা বলছেন, নিরবে মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে এই যন্ত্র। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে থাকতে থাকতে শরীর এক ধরনের তাপমাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে যায়।
দীর্ঘক্ষণ এসিতে থাকলে কী কী সমস্যায় পড়তে পারেন জেনে নিন।
ডিহাইড্রেশন সমস্যা: যাদের দীর্ঘক্ষণ এসি রুমে থাকতে হয় তারা বেশিরভাগই ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। এসি ঘরের মধ্যে থাকলে এসি শরীর থেকে সব আর্দ্রতা শুষে নেয় | তাই বেশি সময় যদি এসি ঘরের মধ্যে থাকার প্রয়োজন হয় তাহলে বেশি করে পানি খান একটু পরপরই।
রোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়: শরীরে গরম লাগার ফলে শরীর থেকে দূষিত বর্জ্য ঘাম আকারে শরীর থেকে নির্গত হয়। এসিতে থাকার ফলে শরীরে ঘামের সৃষ্টি হয় না ফলে ধীরে ধীরে শরীর থেকে দূষিত বর্জ্য নির্গত হওয়ার এই পথ রুদ্ধ হয়ে যায় যার ফলে মারাত্মক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মাথা ব্যথা: এসি ঘরে থাকার সব থেকে বড় সাইড ইফেক্ট হলো মাথা ব্যথা। দেখা গেছে, দীর্ঘক্ষণ এসি ঘরে থাকার পর মাইগ্রেনের ব্যথা অনেকেটাই বেড়ে যায়। কারণ, এসি চললে আবহাওয়ার কোয়ালিটি কমে যায়।
শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত সিম্পটম বেড়ে যায়: চোখ‚ নাক‚ গলায় অসুবিধা হতে পারে। যেমন- বন্ধ নাক‚ ড্রাই থ্রোট বা rhinitis হতে পারে বা চোখ দিয়ে পানি পড়া | যারা এসি ঘরে থাকছে তাদের এইসব হওয়ার প্রবণতা অনেকেটাই বেড়ে গেছে।
ড্রাই ইচি স্কিন: সাধারণত গরমকালে আমরা এসির ব্যবহার বেশি করি। এ সময় সূর্যের এক্সপোজারও অনেক বেশি থাকে। ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। দেখা দিতে পারে চুলকানির সমস্যাও। এটার একটা নামও আছে ‘সিক বিল্ডিং সিন্ড্রোম’।
অ্যাজমা আর অ্যালার্জি বেড়ে যেতে পারে: দীর্ঘ সময় এসি রুমে থাকলে অ্যাজমা আর অ্যালার্জি বেড়ে যেতে পারে। দেখা গেছে, যে এসিগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না সেইরকম ঘরে থাকলে অ্যাজমা আর অ্যালার্জি হওয়ার প্রবণতা অনেকটা বেড়ে যায়।
চোখ শুষ্ক হয়ে যায়: দীর্ঘসময় এসি ঘরে থাকলে চোখ শুষ্ক হয়ে যায় এর ফলে চোখ কড়কড় করবে বা চুলকাতে থাকবে। সেই সেঙ্গে চোখ জ্বালাপোড়াও করতে পারে। আবার বেশি সিরিয়াস সমস্যা হলে চোখে অস্পষ্ট বা ঝাপসা ভাব চলে আসতে পারে।
ইনফেকশাস ডিজিজ হতে পারে: দীর্ঘ সময় এসিতে থাকার ফলে নাকের প্যাসেজ ড্রাই হয়ে যায়। ফলে মিউকাস মেমব্রেনে ইরিটেশন হতে পারে বা মিউকাস শুকিয়ে যেতে পারে। এর ফলে যেকোনো ধরনের ভাইরাস সহজেই শরীরে প্রবেশ করতে পারে, আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।
এসি থেকে ডেঙ্গু হতে পারে: শুধু তাই নয়, এসির পানি যেখানে পড়ে, সেখানে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়াবাহিত প্রাণঘাতী মশার জন্ম হয়। সেক্ষেত্রেও সাবধান থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই গরমে সুস্থ থাকতে এসিতে থাকুন কিন্তু নিয়ম মেনে।