নাইজারের একটি মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে আস্তানা গেড়েছে রুশ সেনারা। গত বছর থেকেই আফ্রিকার দেশ নাইজারে তেমন সুবিধা করতে পারছে না পশ্চিমারা। তবে পশ্চিমাদের অনুপস্থিতি ও জান্তা সরকারের সঙ্গে সখ্যতাকে কাজে লাগিয়ে দেশটিতে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে পুতিনের দেশ রাশিয়া।
শুক্রবার (৩ মে) মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, নাইজারের রাজধানী নিয়ামে ডিওরি হামানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে অবস্থিত এয়ারবেস ১০১ এর একটি পৃথক হ্যাঙ্গার ব্যবহার করছেন তারা। নাইজারের কর্তৃপক্ষ জানায় ৬০ জনের মতো রুশ সেনা নাইজারে থাকবেন। তবে মার্কিন সেনাদের সঙ্গে মেলা-মেশা করছেন না রুশ সেনারা।
তবে এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারেননি তিনি। আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে আল-কায়েদা ও আইএসআইএল প্রভাবিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ১০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি ব্যয়ে নাইজারের মরুভূমির শহর আগাদেজে এই বিমান ঘাঁটি নির্মাণ করেছিল। রাজধানী নিয়ামে থেকে প্রায় ৯২০ কিলোমিটার দূরের এ বিমানঘাঁটিটি মনুষ্যবাহী এবং মনুষ্যবিহীন নজরদারি ফ্লাইট এবং অন্যান্য অপারেশনের জন্য এতদিন ব্যবহার করে আসছিল মার্কিন সেনারা।
২০২৩ সালের ২৬ জুলাই এক অভ্যুত্থানে নাইজারের পশ্চিমাপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী। তারপর একের পর এক পশ্চিমবিরোধী পদক্ষেপ নিতে থাকে জান্তা সরকার। সামরিক সরকারের সঙ্গে জনগণ যোগ দিলে সেপ্টম্বরে নাইজার থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে মার্কিন মিত্র ও নাইজারের সাবেক উপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্স।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ট ক্যাম্পবেল এবং নাইজেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলি মহামান লামিন জেইনের মধ্যকার আলোচনার পর নাইজার থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের পরিকল্পনা শুরু করার প্রতিশ্রুতি দেয় ওয়াশিংটন। নাইজারে এক হাজারের মতো মার্কিন সেনা রয়েছে। এসব সেনাকে জার্মানি পাঠানোর চিন্তা-ভাবনা করছে বাইডেন প্রশাসন।
এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। একে-অন্যের ওপর আধিপত্য বিস্তারে তুমুল প্রতিযোগিতা করছে বিশ্বের অন্যতম দুই পরাশক্তি। এমন সময়ে দুই চিরশত্রু দেশের সেনাদের একই ঘাঁটিতে অবস্থান ভালো বার্তা দিচ্ছে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে ওই মার্কিন কর্মকর্তার দাবি, রাশিয়ার এই পদক্ষেপের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হবে না। স্বল্পমেয়াদেই এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র।
এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে নাইজেরিয়ান ও রুশ দূতাবাসের সঙ্গে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো সাড়া দেয়নি।