ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য রিও গ্রান্ডে দো সুলেতে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ৭৮ জনে। এ ছাড়া বন্যার পানি ওঠার কারণে আরও এক লাখ ১৫ হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
সোমবার (৬ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি শহর পুরোপুরি পানিতে ডুবে গেছে। এতে হাজার হাজার লোক সারা বিশ্ব থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। গত কয়েকদিনের অতিরিক্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে এই বন্যা সৃষ্টি হয়েছে।
রিও গ্রান্ডে দো সুলের সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৭৮ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি এখনও ১০৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। উরুগুয়ে ও আর্জেন্টিনার সীমান্তবর্তী এ রাজ্যের প্রায় ৫০০টির মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি শহর বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ফলে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজারের বেশি মানুষ।
বন্যার কারণে রাজ্যটির বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ও অসংখ্য সেতু ধসে পড়েছে। প্রবল ঝড়ের কারণে একটি জলবিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেন্টো গনকালভস শহরের একটি শহররক্ষাবাঁধের আংশিক ধসে পড়েছে। ফলে রোববার (৫ মে) সন্ধ্যায় বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে রিও গ্রান্ডে দো সুলের চার লাখেরও বেশি মানুষ। এছাড়া, সুপেয় পানির সংকটে পড়েন মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ।
এদিকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা পুনর্গঠন কাজের জন্য সরকার সব ধরনের উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনা সদস্যরা ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করে চিকৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবী দল তৈরি করে লোকজনকে লাইফ জ্যাকেট, খাবার পানি ও জ্বালানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
বন্যায় আটকেপড়াদের উদ্ধারে ও খাবার এবং পানীয় সরবরাহের জন্য স্বেচ্ছাসেবকরা নৌকা, জেট স্কি, এমনকি সাঁতার কেটে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রাজ্যের রাজধানী পোর্তো আলেগ্রেতে একজন উদ্ধারকর্মী ফ্যাবিয়ানো সালদানহা বলেছিলেন, জেট স্কি ব্যবহার করে আমি ও তিন বন্ধু শুক্রবার থেকে প্রায় ৫০ জনকে উদ্ধার করেছি। একটি রাস্তায় প্রবেশ করার সময় আমরা কেবল একটি শব্দও শুনতে পেয়েছি – ‘সাহায্য’,’ ‘সাহায্য’।
চলতি বছরের বিগত চার মাসে অন্তত চার দফা বন্যা হয়েছে ব্রাজিল। আর গত বছরের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে বছরের শেষ নাগাদ দেশটিতে একাধিক বন্যায় অন্তত ৭৫ জনের মৃত্যু হয়।